লেলিহান: ব্রেবোর্ন রোডের অফিসপাড়ার একটি বহুতলের তেতলার ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে আগুনের শিখা। সোমবার সন্ধ্যায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হল মধ্য কলকাতার একটি বহুতল। সোমবার সন্ধ্যার ঘটনা। পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, ব্রেবোর্ন রোডের ওই বাড়িটিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অফিস রয়েছে। আগুনে বাড়িটির ক্ষতি হলেও কেউ হতাহত হননি। তবে আগুন লাগার পরে পাঁচতলা ওই বাড়িতে থাকা গোপালবন্ধু দাস নামে এক ব্যক্তি ভয় পেয়ে ছাদে উঠে গিয়েছিলেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে তিনি তেমন জখম হননি বলেই খবর। গোপালবাবু ওড়িশার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন।
এক আটকে পড়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে কেন দেড় ঘণ্টা সময় লাগল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই এর জন্য দমকলের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, আগুন ছড়িয়ে পড়লে ওই ব্যক্তির বিপদ হতে পারত। যদিও দমকল সূত্রের পাল্টা বক্তব্য, ওই ব্যক্তি ছাদে ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ করছিলেন। গোপালবাবুর দিকেও সতর্ক নজর ছিল তাঁদের।
দমকল সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ওই বাড়ির তেতলায় আগুন লেগেছে বলে খবর আসে। প্রাথমিক ভাবে ছ’টি ইঞ্জিন যায়। আগুনের তীব্রতা জানার পরে ধাপে ধাপে পাঠানো হয় মোট ২২টি ইঞ্জিন। বাড়িটির সামনের দিক অর্থাৎ ব্রেবোর্ন রোড এবং পিছন দিক অর্থাৎ পোলক স্ট্রিট থেকে একযোগে শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বাড়ির তেতলার বাইরে আগুন ছড়ায়নি। একটি সূত্রের খবর, ওই বাড়িটিতে মূলত ব্যাঙ্কের ‘রিকভারি’ এবং ‘ক্লিয়ারেন্স’ শাখার অফিস রয়েছে। আগুনে নষ্ট হয়েছে বহু নথিপত্র। তবে ক্ষতির পরিমাণ রাত পর্যন্ত নিশ্চিত করা যায়নি।
দেখুন ভিডিয়ো:
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তেতলার জানলা ভেদ করে লেলিহান শিখা বেরিয়ে আসছে। আগুন যাতে ছড়িয়ে না-পড়ে, তার জন্য আপ্রাণ লড়ে যাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। ওই এলাকাটি মধ্য কলকাতার বাণিজ্যিক তল্লাট বলেই পরিচিত। করোনা পরিস্থিতি থাকলেও বাণিজ্যিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। আগুনের খবর পেয়ে জড়ো হন প্রচুর মানুষ। দমকলকে সাহায্য করার জন্য হেয়ার স্ট্রিট, বৌবাজার থানা-সহ লালবাজার থেকে পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে আসেন যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডে এবং ডিসি (ট্র্যাফিক) রূপেশ কুমার। আগুন নেভানোর জন্য ব্রেব্রোর্ন রোডের একাংশে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে সন্ধ্যার মুখে আগুন লাগায় রাস্তা বন্ধ করার তেমন প্রভাব পড়েনি। ওই বাড়ির অদূরেই রয়েছে ঐতিহ্যশালী বেথ এল সিনাগগ। সেটিরও ক্ষতি হয়নি।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের অফিস বন্ধ হওয়ার পরে আগুন লাগে। তবে কী ভাবে আগুন লাগল, রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। দমকল সূত্রের দাবি, আগুন লাগার কারণের পাশাপাশি ওই অফিসে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা কেমন ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।