Fire Accident

বেহালা বিমানবন্দরের রানওয়ের পাশে আগুন, রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, রানওয়ে বাদ দিয়ে চার পাশে উঁচু জঙ্গল হয়ে গিয়েছে, যা সাফ করা হয় না। এর আগেও ওই জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৪:৩৮
Share:

রানওয়ের পাশে ঘাসজঙ্গলে জ্বলছে আগুন। নিজস্ব চিত্র।

এর আগে এক বার আকাশে উড়েও পাখির জন্য ফিরে আসতে হয়েছিল হেলিকপ্টারকে। এ বার আগুন লেগে গেল বেহালা বিমানবন্দরের রানওয়ের পাশে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যায় রানওয়ের পাশের ঘাসজঙ্গলে আগুন লাগে। অভিযোগ, রানওয়েতেও শুকনো খড় ছড়িয়ে থাকায় সেগুলি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। এই ঘটনার পরে বেহালা বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, রানওয়ে বাদ দিয়ে চার পাশে উঁচু জঙ্গল হয়ে গিয়েছে, যা সাফ করা হয় না। এর আগেও ওই জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। সূত্রের খবর, এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। কিন্তু প্রবেশপথের সামনে পুলিশি পাহারা থাকলেও ভিতরে তেমন পাহারা থাকে না। অভিযোগ, সেই সুযোগে পাঁচিল টপকে প্রায়ই বিমানবন্দর চত্বরে সহজে ঢুকে পড়েন স্থানীয় যুবকেরা। এমনকি, বিমানবন্দরের ভিতরে অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগও রয়েছে। তাই নিছক মজা করতে তাঁদেরই কেউ আগুন লাগিয়ে থাকতে পারেন বলেও অনুমান করা হচ্ছে। ওই বিমানবন্দরের এক কর্মীর কথায়, ‘‘নিরাপত্তার জন্য এত বড় বিমানবন্দরে পাহারার ব্যবস্থা করতে প্রচুর কর্মী প্রয়োজন। মানুষ-সমান ওই জঙ্গল হাতে কাটা সম্ভব নয়। আবার নিচু জমি হওয়ায় যন্ত্র নামিয়ে জঙ্গল সাফ করাও মুশকিল। চার পাশে হোগলার জঙ্গল হয়ে গিয়েছে।’’

কিন্তু এই ঘটনায় ওই বিমানবন্দরে থাকা হেলিকপ্টারটির সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করে থাকেন যে হেলিকপ্টারটি, তার ঠিকানা এই বেহালা বিমানবন্দর। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দিন হেলিকপ্টারটি সেখান থেকে উড়ে হাওড়ার ডুমুরজলার মাঠে আসে। সফর শেষে আবার বেহালা বিমানবন্দরে ফিরে যায়। সোমবার সকালেও হেলিকপ্টারটি ওই বিমানবন্দর থেকে সল্টলেকে উড়ে আসে। বইমেলার উদ্বোধনের পরে মমতা তাতে চেপে বীরভূম উড়ে যান।

Advertisement

বেহালা বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও (ফ্লাইট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) রয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, রক্ষণাবেক্ষণের এই হাল নিয়ে কেন সরব নয় রাজ্য? বিশেষত যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবহৃত হেলিকপ্টার রাখা থাকে। অসতর্কতায় আগুন গ্রাস করতে পারে হেলিকপ্টারকেও— সেই আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্য সরকারের সেই বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্ণধারের সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা হলে তিনি ফোন ধরেননি, এসএমএসেরও জবাব দেননি। যোগাযোগ করা যায়নি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও।

সূত্রের খবর, ২০০০ সাল পর্যন্ত ওই রানওয়ের আশপাশের জমি লিজ় দেওয়া হত। সেখানে চাষ করা হত এবং তার রক্ষণাবেক্ষণও হত। কিন্তু বাম জমানায় সেই লিজ় দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ঠিক হয়, বেহালা থেকে নিয়মিত যাত্রী উড়ান চলবে। সেই মতো প্রথম দিকে প্রস্তুতি, উদ্যোগ ও পরিকল্পনা শুরু হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে। ফলে এখন শুধু একটি হেলিকপ্টারই রয়ে গিয়েছে সেখানে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement