পোড়া: আগুন নেভার পরে। রবিবার, কাঁকুড়গাছির সেই িফটনেস সেন্টারে। নিজস্ব চিত্র
মানিকতলা মেন রোডের উপরেই ছ’তলা ভবনের দোতলায় ফিটনেস সেন্টার। রবিবার সকাল আটটা নাগাদ কাঁকুড়গাছি মোড়ের সেই সেন্টার তখন সবে খুলেছে। জনা তিনেক কর্মী সেন্টারে ঢুকতেই দেখেন এক কোণ থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। প্রথমে
অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের সাহায্যে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হওয়ায় আতঙ্কিত কর্মীরা উপরে গিয়ে আবাসিকদের খবর দেন। খবর দেওয়া হয় দমকলেও। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় সাতটি ইঞ্জিন আগুন আয়ত্তে আনতে পারলেও ওই সেন্টারের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই সেন্টার থেকে বেরোনো কালো ধোঁয়া আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বহুতলের প্রায় ৫০ জন বাসিন্দা আগুন আতঙ্কে বেরিয়ে ফুটপাতে চলে আসেন। ওই বাড়ির পাঁচতলায় সপরিবার থাকেন নগর দায়রা আদালতের
সরকারি আইনজীবী পিনাকী নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর একমাত্র ছেলের বিয়ে কাল, মঙ্গলবার। সেই উপলক্ষে বাড়িতে অনেক আত্মীয় এসে গিয়েছেন। ছাদে প্যান্ডেল করাও হয়ে গিয়েছে। এ দিন পিনাকীবাবু জানান, আগুন লাগার খবর পেতেই সব বাসিন্দারা সিঁড়ি দিয়ে একসঙ্গে নামতে থাকেন। তাতেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এ দিকে, লিফট বন্ধ থাকায় বয়স্কদের ছাদে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ভবনের
তিনতলার বাসিন্দা এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধাকেও পাঁজাকোলা করে নামানো হয়।
দমকলের আধিকারিকেরা জানান, বহুতলটির চারদিকে খোলা জায়গা থাকায় আগুন অন্য অংশে সে ভাবে ছড়াতে পারেনি। আগুন যাতে উপরে না ছড়াতে পারে সে জন্য ফিটনেস সেন্টারের দু’জায়গায় কাচের দেওয়াল হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলেন কর্মীরা। ওই ভাঙা অংশ দিয়ে জলের পাইপ ঢুকিয়ে আগুন নেভানোর কাজে নামেন দমকলকর্মীরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, বহুতলের সামনে পড়ে রয়েছে প্রচুর কাচের টুকরো। পুড়ে গিয়েছে ফলস সিলিং, পার্টিশন থেকে ভিতরের সব কিছু। দমকলের কাজের প্রশংসা করে বহুতলের
আবাসিক কমিটির সভাপতি বিনোদ বনসল বলেন, ‘‘প্রথমে যে ভাবে আগুন ছড়িয়েছিল তাতে আরও বড় কিছু ঘটতে পারত। কিন্তু দমকল কর্মীদের চেষ্টায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।’’
আগুন নেভানোর কাজে ওই সেন্টারের স্প্রিঙ্কলার যন্ত্রটি ঠিক মতো কাজ করেনি বলে জানিয়েছেন দমকল কর্মীরা। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ছড়িয়েছে বলেই দমকলের অনুমান। বছর দুয়েক আগেও ওখানে আগুন লেগেছিল বলে জানা গিয়েছে। এক কর্তা বলেন, ‘‘সেন্টারে অগ্নি-নিরোধক আইন মানা হয়েছে কি না তা-ও দেখা হচ্ছে।’’