সন্ধান: এই পোস্টার ছাপিয়েই খোঁজ চলছে পালিয়ে যাওয়া কুকুরটির। নিজস্ব চিত্র
ফিফি হারিয়ে গিয়েছে। গত ২৪ জুন বিমানে চেপে কলকাতায় নামার পরে বিমানবন্দর থেকেই উধাও ছ'মাসের ফিফি। তার পর থেকে বিমানবন্দর ও তার আশপাশের এলাকা পায়ে হেঁটে চষে ফেলেছেন জনা পাঁচেক ছাত্রী। কিন্তু, শনিবার পর্যন্ত কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি তাকে।
সন্দেহ এখন ঘনীভূত হয়েছে, ফিফি কোনও ভাবে কলকাতা বিমানবন্দরের অ্যাপ্রন এলাকায় লুকিয়ে থাকতে পারে। অ্যাপ্রন এলাকা হল, যেখানে বিমান দাঁড়ায়, যেখানে রানওয়ে রয়েছে এবং যেখানে ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে বিমান রানওয়েতে পৌঁছয়। বিশাল ওই এলাকায় ফিফিকে খুঁজে বার করতে শনিবারই কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্যকে ইমেলে অনুরোধ করেছেন ফিফিকে খুঁজে বেড়ানো এক ছাত্রী, দ্যুতিস্মিতা দাস।
এ দিন কৌশিকবাবু বলেন, “বিষয়টি নিয়ে মেনকা গাঁধী আমাকে ফোন করেছিলেন। আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। ওঁরা বিমানবন্দর এলাকায় পোস্টার মারার অনুমতি চেয়েছিলেন। তা দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন: জুম-কে টক্কর দিতে এল জিয়োমিট, একেবারে বিনামূল্যের ভিডিয়ো কলিং অ্যাপ
শুধু ফিফিকে খুঁজতেই দিল্লি থেকে উড়ে এসেছেন নন্দিনী কৌশিক। নয়ডায় শিবনাদর বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-টেক চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী তিনি। এ দিন ফোনে নন্দিনী বললেন, “২৪ জুন রাতে ফিফির হারিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে দিন কয়েক অপেক্ষা করেছি। সে অর্থে ও তো আমারই বাচ্চা। আমিই ওকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে প্রথম উদ্ধার করি। কিন্তু এঁরা চার দিন ধরে খুঁজে না পাওয়ায় আমি ২৮ জুন কলকাতায় এসেছি। বিমানবন্দরের চারপাশে খুঁজে বেড়াচ্ছি।”
৬ জুলাইয়ের পরে কলকাতা থেকে দিল্লির উড়ান বন্ধ হয়ে যেতে পারে শুনে তাঁর ফেরা নিয়ে খানিকটা সমস্যাতেও পড়েছেন নন্দিনী।
নয়ডা থেকে কয়েক দিন বয়সি ফিফিকে উদ্ধারের পরে তাকে দত্তক নেন সেখানকার ছাত্রী, কলকাতা নিবাসী নীলাঞ্জনা কোঠারি। লকডাউনে উড়ান বন্ধ থাকায় ফিফিকে দিল্লির একটি হস্টেলে রাখা হয়। নন্দিনীই ছিলেন দেখভালের দায়িত্বে। উড়ান চালু হতে নীলাঞ্জনা নিজে চলে আসেন কলকাতায়। ২৪ জুন সন্ধ্যায় এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে পণ্য হিসেবে খাঁচায় ভরা ছ'মাসের কুকুরছানা ফিফি কলকাতায় আসে। বিমানবন্দরের পণ্য বিভাগে গিয়ে নীলাঞ্জনা খাঁচা খুলে তাকে জল খাওয়াতে গেলে এক লাফে খাঁচা থেকে বেরিয়ে চম্পট দেয় ফিফি। তার পর থেকেই খোঁজা হচ্ছে তাকে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজির চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী দ্যুতিস্মিতার কথায়, “আমরা অন্ধকারে। কেউ ওকে তুলে নিয়ে চলে গেল কি না, কে জানে। হতে পারে ও কৈখালির দিকে চলে গিয়েছে। আমরা এ বার ওদিকটাও খুঁজতে শুরু করব।”
চার দিকে পোস্টার দিয়ে দ্যুতিস্মিতারা জানিয়ে দিয়েছেন, ফিফিকে যে বা যাঁরা খুঁজে দেবেন, তাঁদের নগদ ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।