শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, লোগো পর্যাপ্ত পরিমাণে না আসায় পোশাক দেওয়ার কাজে দেরি হচ্ছে। ফাইল ছবি
পুজোর বাকি আর দু’সপ্তাহ। শিক্ষা দফতর আগে জানিয়েছিল, পুজোর আগেই কলকাতার সব স্কুলপড়ুয়ারা নতুন পোশাক পাবে। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, শহরের সরকারি, সরকার পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে নীল-সাদা পোশাক পৌঁছনোর সম্ভাবনা কার্যত নেই। কারণ, তৈরি নেই বিশ্ব বাংলা লোগো। এই লোগো পোশাকের গায়ে সেলাই করে লাগাতে হবে। তবেই পোশাক সম্পূর্ণ হবে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, লোগো পর্যাপ্ত পরিমাণে না আসায় পোশাক দেওয়ার কাজে দেরি হচ্ছে। দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, দু’সেট স্কুল-পোশাকের মধ্যে অন্তত এক সেট নতুন পোশাকও যাতে পুজোর আগে দেওয়া যায়, তাঁরা সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে নীল-সাদা পোশাক দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল কলকাতার স্কুলগুলিতে। কিছু স্কুল পেলেও বেশির ভাগ স্কুলের অভিযোগ ছিল, ছাত্রছাত্রীরা নতুন পোশাক পায়নি। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতর থেকে জানানো হয়েছিল, পুজোর আগে সব স্কুলে নতুন পোশাক পৌঁছে যাবে। দফতরের এক কর্তার কথায়, “কলকাতায় মোট স্কুলের সংখ্যা ২০৮৫। এর মধ্যে কয়েকটি স্কুল পড়ুয়া-শূন্য। সব মিলিয়ে ১৮৭১টি স্কুল চলছে। তাদের মধ্যে ৬০০টি স্কুলে দু’সেট করে পোশাক ইতিমধ্যেই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা চলছে, দ্রুত ৭০০টির মতো স্কুলে অন্তত এক সেট করে নীল-সাদা পোশাক দেওয়ার।’’
সারা বছর ধরে অপেক্ষায় থেকে এখন বেশ কিছু স্কুল পোশাক পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। কয়েকটি স্কুল জানাচ্ছে, তাদের পড়ুয়াদের পোশাকের মাপই নিতে আসেনি দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী। অথচ, করোনা-পরবর্তী সময়ে স্কুল শুরু হওয়ার পরে পড়ুয়াদের নতুন পোশাক খুবই জরুরি ছিল বলেমনে করছেন শিক্ষকেরা। কারণ, অনেকেরই পোশাক ছোট হয়ে গিয়েছে বা ছিঁড়ে গিয়েছে।
সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জয়তী মজুমদার মিত্র বলেন, “বছর শেষ হতে চলল, অথচ এখনও পড়ুয়ারা এক সেট পোশাকও পেল না। এর পরে আর নতুন পোশাক পেয়ে লাভ কী? শিক্ষাবর্ষ তো শেষ হতে চলল।’’ শ্যামবাজারের পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, “পুজোর আগে নতুন পোশাক না পেলে তা আর কবে পরবে পড়ুয়ারা? পুজোর পরে স্কুল খুলবে সেই অক্টোবরের শেষে। নভেম্বর থেকে তো শুরু হয়ে যাবে পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে ছাত্রেরা স্কুলে আসে না। এর পরে আবার নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু।’’ তিনি জানান, নতুন বছরে আগের বছরের মাপ নেওয়া পোশাক দিলে সেই পোশাক পড়ুয়াদের অনেকের গায়েই ছোট হবে। কারণ, ওদের তো বাড়ন্ত বয়স।