ফাইল চিত্র
কলকাতা, হাওড়া এবং শহরতলি এলাকায় সংক্রমণের লেখচিত্র নিম্নমুখী হওয়ায় সর্বত্র সেফ হোমে রোগী ভর্তি কমেছে। ফলে বিভিন্ন পুর কর্তৃপক্ষ খরচ কমাতে কোথাও বন্ধ করছেন সেফ হোম, কোথাও বা শয্যা কমাতে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা। কেউ কেউ অবশ্য ওই দুই পথে না গিয়ে তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছেন।
খরচ কমানোর পথে হেঁটে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত তিনটি সেফ হোম আজ, শনিবার থেকে বন্ধ হচ্ছে। শুধু আলিপুরের ‘উত্তীর্ণ’ এবং বেহালার পর্ণশ্রী পলিটেকনিক কলেজের সেফ হোম দু’টি চালু থাকবে। কলকাতা পুরসভা পরিচালিত পাঁচটি সেফ হোমের একটি, ‘উত্তীর্ণে’ ২০০টি শয্যায় শুক্রবার রোগী ছিলেন ২১ জন। ইএম বাইপাসের কাছে একটি বেসরকারি সংস্থার নবনির্মিত ভবনে ২০০ শয্যায় রোগী মাত্র ৯ জন। বেহালার পর্ণশ্রী পলিটেকনিক কলেজে পঞ্চাশটি শয্যায় রোগী রয়েছেন ২১ জন। অন্য দিকে, উত্তরের হরেকৃষ্ণ শেঠ লেন ও দর্জিপাড়ার নর্থ মেটারনিটি হোমে রোগী নেই। তাই ইএম বাইপাস, হরেকৃষ্ণ শেঠ লেন এবং নর্থ মেটারনিটি হোমের সেফ হোম বন্ধ হচ্ছে।
মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই কলকাতা পুরসভা পরিচালিত সেফ হোমে রোগী ভর্তি কমতে থাকে। এ জন্য তাদের পরিচালিত রাজারহাটের একটি সেফ হোম জুনের শুরুতেই বন্ধ করে দেয় পুরসভা।
রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায় সপ্তাহ দুয়েক আগেও সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ২৫০-৩০০। গত কয়েক দিনে তা নেমে হয়েছে ৩০-৪০। রোগী কম, তাই মাসখানেক আগে তৈরি কামালগাজির ৫০ শয্যার সেফ হোমটি শুক্রবার বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুর চেয়ারম্যান পল্লব দাস। তিনি জানান, পুর এলাকায় নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সহায়তায় দ্বিতীয় সেফ হোমটি এখনও চলছে।
তবে শয্যা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও সেফ হোম বন্ধ হচ্ছে না হাওড়ায়। সেখানে ১৩টি সরকারি সেফ হোমের মধ্যে জেলার ১৪টি ব্লক মিলিয়ে রয়েছে ১২টি সেফ হোম। সব থেকে বড় সেফ হোমটি আছে বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কোনও সেফ হোমেই রোগী নেই। কারণ, মানুষ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাতে আগ্রহী। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “সেফ হোম এখনই বন্ধ করছি না। পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত হবে।’’
সংক্রমণ কমতে বাড়তি আয় কমাতে চাইছেন দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষও। শুক্রবার পুর প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠকে এই ব্যয় সঙ্কোচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যেখানে পুর এলাকায় দৈনিক ৬০ জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন, সেখানে এক সপ্তাহে ১১ জন সংক্রমিত হয়েছেন। দু’টি সেফ হোম মিলিয়ে ১০৫টি শয্যায় তিন জন ভর্তি। তাই শয্যা কমানো হচ্ছে।
সাতটি পুরসভা নিয়ে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। যার মধ্যে টিটাগড় পুরসভার সেফ হোম ফাঁকা। মে-র শুরুতে ব্যারাকপুর পুরসভা চালু করেছিল ১০০ শয্যার হাসপাতাল। সেখানে দৈনিক ৫-৬ জন রোগী আসছেন। নৈহাটি পুরসভার ২৭০ শয্যার সেফ হোমে এ দিন রোগী ছিলেন ৭০ জন। হালিশহর পুরসভার বীজপুরের একশো শয্যার সেফ হোমে রোগী ১৫ জন। তবুও তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতিতেই বন্ধ হচ্ছে না শিল্পাঞ্চলের সেফ হোম।