বিপজ্জনক: জমা জল এড়াতে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত। বুধবার, ক্ষুদিরাম পল্লিতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায় গোটা এলাকায়। দীর্ঘ দিন ধরে সেই জল নামে না। গাড়ি নিয়ে যাতায়াত তো দূরের কথা, হেঁটেও চলাচল করা যায় না। ওই এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু পুকুরও। জল জমে রাস্তা আর পুকুর একাকার হয়ে গেলে বাড়ে বিপদের আশঙ্কা। ঝুঁকি এড়াতে তখন বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়েই চলে যাতায়াত।
প্রত্যন্ত কোনও গ্রাম নয়, উত্তর শহরতলির মধ্যমগ্রাম পুর এলাকায় বছরের পর বছর এই সমস্যায় ভুগছেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরামপল্লি ও মিলনপল্লির বাসিন্দারা। জমা জল বেরোনোর জন্য এলাকায় নর্দমাও রয়েছে। তা সত্ত্বেও সামান্য বৃষ্টি হলেই জল জমছে কেন?
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই এলাকাটি আশপাশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেকটাই নিচু। তাই সেই সমস্ত এলাকার জলও ওই এলাকায় এসে জমা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ মণ্ডলের কথায়, ‘‘এই সমস্যার কথা বার বার প্রশাসনকে জানানোর পরে বছর চারেক আগে একটি নর্দমা তৈরি করা হয়। সেই নর্দমা দিয়ে জমা জল বাণীকণ্ঠ খালে (স্থানীয় মানুষ চটকার খাল নামেও ডাকেন) ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।’’
ওই এলাকার এক দিকে বাণীকণ্ঠ খাল, অন্য দিকে রয়েছে নোয়াই খাল। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সোমা মণ্ডল বলেন, ‘‘নিচু এলাকা বলে আশপাশের পাঁচটি ওয়ার্ডের জল আমাদের এখানে এসে জমা হয়। নর্দমা তৈরি করে জমা জল বাণীকণ্ঠ খালে ফেলার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু খালটি অগভীর, কিছু অংশ বুজে গিয়েছে। তাই বৃষ্টি হলে নর্দমার জল ‘ব্যাক ফ্লো’ করে আসে। খালে পড়তে পারে না।’’
এলাকার মানুষের বক্তব্য, হয় বাণীকণ্ঠ খালের সংস্কার করতে হবে, নয়তো নোয়াই খালে জমা জল ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। মধ্যমগ্রাম পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে চাষের জমির উপর দিয়ে আর একটি নর্দমা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় কিছু কৃষক জমি দিতে রাজি না হওয়ায় সেই কাজ আটকে যায়। একই ভাবে জমি-জটে আটকে যায় বাণীকণ্ঠ খালের সংস্কারও। তবে এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, খাল সংস্কার বা নিকাশি নালার জন্য সরকার নির্ধারিত দামে জমি নেওয়া হলে তাঁদের আপত্তি নেই।
এ বিষয়ে মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘বাণীকণ্ঠ খালের সংস্কার না হওয়ার ফলেই এই সমস্যা। ওই খালের তিন কিলোমিটার অংশ ভরাট হয়ে গিয়েছে। সেই জমি কেনার জন্য সাত কোটি আর খালের মাটি কাটার জন্য আরও সাত কোটি টাকা সরকারের তরফে চলেও এসেছে। খাল সংস্কার হয়ে গেলেই ওই সব এলাকায় জল জমার সমস্যা একেবারে মিটে যাবে।’’