ভূপতিত: আমপানের জেরে পড়ে যাওয়া গাছের গুঁড়িতে আটকে পথ। ভবানীপুরে। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে শহর জুড়ে উপড়ে গিয়েছে বহু গাছ। সেগুলি কেটে সরানোর প্রক্রিয়া চলছে এখনও। কিন্তু কেটে ফেলা গাছের গুঁড়ি কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এর আগে ঝড়ে অল্প সংখ্যক গাছ উপড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, গুঁড়িগুলি রাস্তার ধারে রাখলে বেশি সমস্যা হয় না। কিন্তু এত গাছের গুঁড়ি রাস্তার ধারে পড়ে থাকলে পথচারী এবং যানবাহনের চলাচলে সমস্যা হতে পারে। লকডাউন শিথিল হওয়ায় রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাও এখন বেড়ে গিয়েছে। তাই গুঁড়িগুলি কী ভাবে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কলকাতায় মূলত পুরসভা ছাড়াও কেএমডিএ, পূর্ত দফতর এবং বন দফতর গাছ লাগায়। নিয়ম অনুযায়ী, ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছের গুঁড়িগুলি সংশ্লিষ্ট দফতর দরপত্রের মাধ্যমে নিলাম করে। এই ক্ষেত্রেও তা-ই হওয়ার কথা। কিন্তু কবে, কী ভাবে এত পরিমাণ গাছের গুঁড়ি দ্রুত সরানো হবে তা নিয়ে কোনও দফতরই এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। গুঁড়িগুলি চুরি হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা আধিকারিকদের।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী গাছের গুঁড়ি রাস্তার এক দিকে জড়ো করে রাখা ছাড়া কোনও উপায় নেই। কারণ সেগুলি রাখার আলাদা জায়গা নেই। অবস্থা স্বাভাবিক হলে সেগুলি নিলাম করা হবে। তবে তা সময়সাপেক্ষ।”
পুরসভার উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক জানান, বাজারমূল্য বেশি, এমন বড় গাছ ছাড়াও ছোট গাছের অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দিয়ে তা দরপত্রের মাধ্যমে নিলাম করা হয়। এ থেকে পুরসভার আয়ও হয়।
প্রত্যেক বছরই ঝড়ে কিছু গাছ পড়ে কিন্তু সংখ্যা কম থাকায় সমস্যা হয় না। আমপানের ক্ষেত্রে এত গাছ উপড়ে পড়েছে যে অবস্থা সামাল দিতে সমস্যা হচ্ছে। কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা জানান, রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবরে কত এবং কী কী গাছ পড়েছে, তার তালিকা তৈরি করে বন দফতরকে জানানো হবে। বন দফতরের অনুমতি নিয়ে ফরেস্ট
ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের মাধ্যমে দরপত্র ডেকে গুঁড়িগুলি নিলাম করা হবে। তত দিন সেগুলি দুই সরোবর চত্বরেই রাখা হবে। বন দফতরের তরফেও জানানো হয়েছে, তারাও পড়ে যাওয়া গাছ কেটে নিলাম করে। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, উপড়ে পড়া গাছ এই মুহূর্তে রাস্তা থেকে সরানোই প্রাথমিক কাজ। গুঁড়ি অপসারণ নিয়ে পরে ভাবা হবে।