ফাইল চিত্র।
দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রা। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফর। সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে তাঁকে ঘিরে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মোদী-মমতার অনুষ্ঠানের জেরে আজ, শনিবার শহরে যানজটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যদিও পুলিশ বলছে, সপ্তাহের শেষ এবং সুভাষচন্দ্রের জন্মদিন উপলক্ষে ছুটি থাকায় যানজট কিছুটা কম হতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তাঁদের যাত্রাপথের বিভিন্ন সংযোগস্থলে রাস্তা বন্ধ রাখা হবে। ফলে সেই সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলিকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে লালবাজারের।
আজ শনিবার, ২৩ জানুয়ারি দিনটি ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উপলক্ষে শ্যামবাজার থেকে রেড রোডে সুভাষচন্দ্রের মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মিছিল করবেন মুখ্যমন্ত্রী। লালবাজার সূত্রের খবর, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে ওই শোভাযাত্রা শুরু হবে। স্থির হয়েছে, ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ হয়ে রেড রোডে সুভাষচন্দ্রের মূর্তি পর্যন্ত যাবে ওই শোভাযাত্রা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা আগেই শ্যামবাজারে এসে জমায়েত করবেন। ফলে সেই সব রাস্তাও যানজটের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার পরে তার পথে যে সব সংযোগস্থল পড়বে, সেখানে সাময়িক ভাবে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। ফলে পুলিশের অনুমান, ছুটির দিন হলেও শোভাযাত্রা শুরুর আগে-পরে ওই রাস্তাগুলিতে গাড়ির গতি স্তব্ধ হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর ওই মিছিল ধর্মতলায় পৌঁছনোর কিছু পরেই শহরে এসে পৌঁছনোর কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। এক দিনের কলকাতা সফরে জাতীয় গ্রন্থাগারে সুভাষচন্দ্র শীর্ষক এক আলোচনাসভায় পৌরোহিত্য করার কথা রয়েছে মোদীর। তার পরে তিনি যাবেন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার অন্যতম অভিজ্ঞান ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। সেখানে সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে একটি স্থায়ী গ্যালারির উদ্বোধন করবেন তিনি। এ ছাড়া দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাংলার বিপ্লবীদের নিয়ে আরও একটি গ্যালারির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে হেলিকপ্টারে করে রেস কোর্সে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরে সড়কপথে লাভার্স লেন, হসপিটাল রোড, এ জে সি বসু রোড, বেলভেডিয়ার রোড হয়ে জাতীয় গ্রন্থাগারে পৌঁছবে তাঁর কনভয়। সেখানে অনুষ্ঠান শেষে একই পথে ফিরে মোদী পৌঁছবেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি এই রুট ঠিক করেছে। শুক্রবার পর্যন্ত ঠিক আছে যে, রেস কোর্স থেকে শনিবার রাতে হেলিকপ্টারে বিমানবন্দরে ফিরে বিশেষ বিমানে দিল্লি ফিরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, শহরে পৌঁছে প্রথমে নেতাজি ভবনে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। সে ক্ষেত্রে জওহরলাল নেহরু রোড, এলগিন রোড দিয়ে তাঁর কনভয় যাতায়াত করবে। ফলে সেই সব রাস্তাতেও যান নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। তবে রাত পর্যন্ত তাঁর সফরসূচি চূড়ান্ত ভাবে জানায়নি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার সময়ে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ওই সব
রাস্তায় ব্যারিকেড বসানো হবে। সে সময়ে সেই সব রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। এর জেরে ওই সব রাস্তায় গাড়ির গতি বাধাপ্রাপ্ত হবে বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে ছুটির দিনে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকতে পারে বলে ভোগান্তি বেশি হবে না বলেই মনে করছেন ট্র্যাফিক বিভাগের কর্তারা।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল দিয়ে দিনভর বি টি রোডমুখী গাড়ি চালানো হবে। আর শহরের ঢোকার গাড়িগুলিকে বি টি রোড থেকে রাজা মণীন্দ্র রোড হয়ে পাইকপাড়া, বেলগাছিয়া রোড হয়ে যেতে হবে বলে লালবাজার জানিয়েছে। যানজটের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই এই পরিবর্তন বলে মনে করছে পুলিশের একাংশ।
এ ছাড়া লালবাজার জানিয়েছে, গত বছরের জানুয়ারিতে শেষ কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই দিন যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যাতায়াতের জন্য পুলিশ রাস্তা আটকে দিয়েছিল, এ বারও তেমনই ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ছুটির দিনে রাস্তায় বেরিয়ে যানজটে পড়ার আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলেই মনে করছে পুলিশের একাংশ।