অপরিষ্কার: যতীন মৈত্র পার্কে জমেছে জল। ছবি: সুমন বল্লভ
ডেঙ্গি বিজয় অভিযানের সূচনা হলেও শহরে পুরসভা-নিয়ন্ত্রিত উদ্যানগুলিতে জমে থাকা জল পরিষ্কার করা পুর কর্তৃপক্ষের পক্ষে কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন এখনও রয়েই গেল। লকডাউন শিথিল হলেও উদ্যান খুলে দেওয়ার নির্দেশিকা এখনও আসেনি। তা ছাড়া উদ্যান রক্ষণাবেক্ষণে পুরসভার মালির সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলে উদ্যান ঠিকমতো পরিষ্কার করা না হলে সেখানে জল জমে ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
যদিও পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্যানগুলিতে যাতে জল না জমে থাকে, তার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে উদ্যান খুলে সাফাইকাজ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরকেও উদ্যান পরিষ্কারের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা উদ্যান দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘পার্ক পরিষ্কার রাখতে মালির সমস্যা রয়েছে ঠিকই, তবে আপাতত সকালে কয়েক ঘণ্টা উদ্যান খুলে জমা জল এবং আগাছা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য দফতরকে দিয়ে সেখানে মশার লার্ভা মারার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। কিছু জায়গায় সেই কাজ শুরুও হয়েছে।’’ তবে তিনি জানান, যে হেতু উদ্যানগুলি বেশির ভাগ সময়ে বন্ধ থাকছে তাই তার ভিতরে আবর্জনা জমার সম্ভাবনা আপাতত কম।
পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম আগেই জানিয়েছিলেন, বিনোদন পার্ক বাদ দিয়ে শহরের অন্য উদ্যানগুলি খুলে রাখার ব্যাপারে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে আবেদন জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত অনুমতি দ্রুত মিলবে বলেও তিনি আশাবাদী।
পুরসভার উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক জানান, কলকাতা পুর এলাকায় উদ্যানের সংখ্যা প্রায় ৭০০টি। কিন্তু স্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক মিলিয়ে মালির সংখ্যা সর্বসাকুল্যে মাত্র ৪০০ জন। পুরসভার দু’টি নার্সারির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও রয়েছে এই মালিদের কাঁধেই। তাই পুরসভার সব ক’টি উদ্যান রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে মালিদের অভাব একটা বড় সমস্যা। করোনা আবহে লকডাউনের সময় থেকে তাঁদের অনেকেই অনুপস্থিত। তা ছাড়া এই সময়ে উদ্যানগুলি বন্ধ থাকায় সেখানে সব সময়ে নজরদারি করাও সম্ভব হচ্ছে না।
পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, প্রাতর্ভ্রমণকারীদের দাবি মেনে সকালে কয়েক ঘণ্টা উদ্যান খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তখনই সেখানে যতটা সম্ভব নজরদারি করা হচ্ছে। তবে যে সব উদ্যানে বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলি এখনও পুরোপুরি বন্ধ। সেখানে পুর কর্মীরা মাঝেমধ্যে গিয়ে কোথাও জল জমে আছে কি না, তা দেখে নিয়ে প্রয়োজনে পরিষ্কারের কাজ করছেন বলেও দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।