ব্যস্ত কর্পোরেটের জীবনে পয়লা বৈশাখ? ছুটি, সে ভুলেই যান। দিনভরের উদ্যাপনের প্ল্যান তাকে তুলে সোজা অফিস এবং আর পাঁচটা দিনের মতো চেনা ব্যস্ততা। তা বলে কি বছরের প্রথম দিনটাতেও সাজবেন না?
বরং অফিসেই নববর্ষের উদ্যাপনে মাতুন খাঁটি বাঙালিয়ানায়, এথনিক সাজে, বলছেন ডিজাইনাররা। ডিজাইনার চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরার কথায়, ‘‘গরমে হাল্কা প্যাস্টেল শেডের চেক প্রিন্টের পাতলা সুতির শাড়ির সঙ্গে আধুনিক ব্লাউজেই হওয়া যায় নজরকাড়া। পরা যায় চান্দেরি বা শিফন শাড়িও। সঙ্গে হাল্কা মেকআপ, ডোকরার দুল-নেকলেস, কাঠের বালা কিংবা রুপোর হাল্কা ছিমছাম গয়না, ফ্ল্যাট স্যান্ডেল এবং শান্তিনিকেতনি বা গুজরাতি-জয়পুরি কাজের ঝোলা। অথবা বাছতে পারেন হাল্কা কাজের লম্বা ঝুলের কুর্তি, হাল্কা রঙের পালাজো-ও।’’
গরমের হাল্কা শাড়ি, কুর্তির জোগান নিয়ে হাজির শহরের বিভিন্ন দোকান ও ব্যুটিকের পয়লা বৈশাখী এগ্জিবিশনগুলো। হো চি মিন সরণিতে ক্রাফ্টস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার বিপণি ‘কমলা’য় রয়েছে বাংলার বেগমপুরী তাঁত, বর্ধমানের জামদানি, অন্ধ্রের ইক্কত, মঙ্গলগিরি, চেন্নাইয়ের চেট্টিনাড এবং চান্দেরি শাড়ি। নানা রঙের মাহেশ্বরী এবং ব্লক প্রিন্টের সম্ভার বালিগঞ্জের উইভার্স স্টুডিওয়। ডিজাইনার চৈতালী দাশগুপ্তের ব্যুটিক ‘শ্রাবস্তী’র ভাঁড়ারে আবার রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর শাড়ি, নানা ধরনের ছাপা,, বাটিকের কাজ করা সুতি এবং ছাপা ও প্যাচওয়ার্কের কাজ করা ডিজাইনার শাড়ি। রয়েছে চৈতালীর ‘পদ্য পোশাক’ সিরিজের রবীন্দ্র কবিতা ও রবীন্দ্রনাথ, নন্দলাল বসু, রামকিঙ্কর বেজের ছবি আঁকা কুর্তিও। ভেজিটেবল ডাইয়ের সুতির শাড়ি, ইক্কত রয়েছে ট্র্যাঙ্গুলার পার্কের ব্যুটিক ‘বহ্নিশিখা’য়। রয়েছে টাই অ্যান্ড ডাইয়ের কাজ করা নানা রঙের মটকা শাড়ি, আজরখ প্রিন্টের সুতির কুর্তা এবং ভেজিটেবল ডাইয়ের সামার জ্যাকেট। শহরের একটি শাড়ি বিপণিতে রংবেরঙের কাঞ্চি কটন, সাউথ কটনের শাড়ি, নানা রঙের ফ্লোরাল শিফনও।
সন্ধে গড়াতেই জমে যাবে উদ্যাপন। ডিজাইনারেরা বলছেন, রাত-পার্টির জন্য বেছে নেওয়া যায় তুলনায় উজ্জ্বল রঙের সাজ। গয়নাও হতে পারে সকালের তুলনায় খানিক ভারী। ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল যেমন বলছেন, ‘‘হলুদের নানা শেডে, হাল্কা এমব্রয়ডারির আরামদায়ক শাড়ি পরতে পারেন। ব্লাউজটা হোক একটু কায়দার। এক্সপেরিমেন্টের পথে হাঁটতে চাইলে ট্রাউজার্স বা পালাজোর সঙ্গে শাড়িটাকে জড়ানো যায়। পরা যায় কুর্তা-পালাজোর সঙ্গে চওড়া বেল্ট বা কুর্তার সঙ্গে ধোতি প্যান্টও।’’ সন্ধের সাজে চন্দ্রাণী বেছে দিচ্ছেন সবুজ, হলুদ, রানি, কমলা রঙের হাল্কা সিল্ক, শিফন, ক্রেপ বা চান্দেরি শাড়ি, নানা রঙের ফ্লোরাল প্রিন্টের কুর্তি বা ড্রেস। দু’জনেই বলছেন, ভারী দুল পরলে গলায় হাল্কা কিছু বা উল্টোটা করলেই ভাল দেখাবে। পরা যায় সোনা-রুপোর দুল, হার বা নাকছাবিও। সঙ্গে মেকআপে একটু বাড়তি রং ও উজ্জ্বলতা আর মানানসই জুতো ও ব্যাগ।
তা হলে? বছরের প্রথম দিনটায় আপনি কী পরছেন?