এই জায়গাতেই উদ্ধার হয় মৃতদেহ। —ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি
তিন দিন ধরে বৃদ্ধা মায়ের মৃতদেহ আগলে রেখে দিল মেয়ে। সঙ্গী বৃদ্ধার স্বামীও। ঘটনাটি ঘটেছে সরশুনায়। এই ঘটনা শহরবাসীকে ফের মনে করিয়ে দিয়েছে রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর,রবিবার দুপুরে কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়ালে ফোন আসে। সেই ফোনেই পুলিশকে জানানো হয়, রাখাল মুখোপাধ্যায় রোডের একটি বহুতলে নিজের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ছায়া চট্টোপাধ্যায় নামে ৮২ বছরের এক বৃদ্ধা।
সরশুনা থানার পুলিশ ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে ওই বৃদ্ধার দেহ ডাইনিং রুমের মেঝেতে দেখতে পান। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, তিন দিন আগে মৃত্যু হয়েছে ছায়ার। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘সম্ভবত অপুষ্টি, অনাহার এবংবার্ধক্যজনিত রোগে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।’’পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়িতে মায়ের মৃতদেহ আগলে ছিলেন ছায়ার বৃদ্ধ স্বামী এবং মেয়ে নীলাঞ্জনা।
এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসেও ওই বাড়ি থেকে একই ভাবে উদ্ধার করা হয়েছিল ছায়ার ৫৬ বছর বয়সী ছেলে দীপাঞ্জনের দেহ। সেই সময়েও তদন্তে জানা যায়, অন্তত তিন দিন আগে মৃত্যু হয়েছিল দীপাঞ্জনের। দেহ পচে গন্ধ বেরোতে থাকে। তখন প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দিলে দেহ উদ্ধার করা হয়।
আরও পডু়ন: কাটমানির অভিযোগের জের, সেই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে মানাহানির মামলা ঠুকলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন
আরও পড়ুন: রাতভর অপারেশন ভারত-বাংলাদেশ উপকূল রক্ষীদের, ১০০-র বেশি নিখোঁজ ভারতীয় ট্রলার উদ্ধার
এ দিন ওই ফ্ল্যাটে দেখা যায়, ছায়ার স্বামী শয্যাশায়ী। তাঁর কথাবার্তাও অসংলগ্ন। একই রকম ভাবে অসংলগ্ন মেয়ে নীলাঞ্জনার কথাবার্তা। মেয়ে দাবি করেন, ‘‘আমার মা তো মারা যাননি। মায়ের শরীর খারাপ। মাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে সবাই।’’
প্রতিবেশী নূপুর ঘোষাল বলেন, ‘‘পরিবারের সবাই মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এরা কারওর সঙ্গে মেশেও না। আর্থিক অবস্থাও বেশ খারাপ।’’ অন্য এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘এঁরা মানসিক ভাবে এতটাই অসুস্থ যে এঁদের রান্নাবান্নাও হয় না। ইদানীং সকাল বিকেল কোনও এক আত্মীয় খাবার পৌঁছে দেন।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নীলাঞ্জনার মামাতো এক ভাই আছেন। তাঁকে খবর দেওয়া হয়েছে।