প্রতীকী ছবি
অজ্ঞাতপরিচিতদের খবরের ভিত্তিতে সাউথ ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তব্যরত এক কর্মী প্রায় ৪০ কোটি টাকা-সহ গাড়িটি আটকে ছিলেন। তদন্তে নেমে জানা যায়, পাচারের জন্য নয়, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের টাকা নিয়েই গাড়িটি যাচ্ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে, ক্যামাক স্ট্রিটের মোড়ে।
এ দিন সেখানে ডিউটি করছিলেন এএসআই বিকাশকলি সাঁই। দু’-তিন জন আচমকা তাঁকে বলে যান, একটি সাদা রঙের গাড়ি আসছে। তাতে করে প্রায় ৫০ কোটি টাকা পাচার করা হচ্ছে। কিছু ক্ষণ পরেই একটি সাদা গাড়ি আসতে দেখেন ওই পুলিশকর্মী। যথারীতি গাড়িটি আটকান তিনি। এ দিকে
পুলিশ দেখেই গাড়ির আরোহীরা নেমে পালান। গার্ডের অতিরিক্ত ওসি নাজমুল হককে সেখানে ডেকে পাঠান বিকাশকলি। চালককে জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, সিএমএস নামে এক নিরাপত্তা সংস্থা ওই গাড়িটি ভাড়া করেছে। কথার মাঝেই নজর পড়ে গাড়ির পিছনের আসনের নীচে কয়েকটি ব্যাগ রাখা। সেগুলি চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা। ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে পড়ে অগুণতি টাকা। জেরায় জানা যায়, সেই টাকার পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি!
কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া, কাগজ ছাড়া কোথায় এত টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল? চালক জানান, হো-চিন মিন সরণিতে ওই নিরাপত্তা সংস্থার অফিস থেকে টাকা তুলে বাইপাসের মেট্রোপলিটনের অফিসে গিয়েছিল গাড়িটি। কিন্তু সেখানে টাকা দেওয়া যায়নি। তাই ফের গাড়িটি হো-চিন মিন সরণির অফিসেই ফিরছে।
কাগজ ছাড়া কেন এত কোটি টাকা রবিবার বার করতে হল? উত্তর পেতে ওই সংস্থারই ঊর্ধ্বতন অফিসারদের ঘটনাস্থলে ডেকে পাঠানো হয়। পাশাপাশি কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের মেন কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি বিশদে জানিয়ে টাকা ভর্তি গাড়িটি শেক্সপিয়র সরণি থানার হাতে তুলে দেন সাউথ ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসারেরা। ওই থানার পুলিশ সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, টাকাগুলি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের। নিরাপত্তা সংস্থার ইউনিয়নের সঙ্গে গোলমালের জেরে গত কয়েক বছর ধরে এ ভাবেই টাকা নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
এ দিকে, টাকা পাচার হচ্ছিল না জানতে পেরে হাঁফ ছাড়ে পুলিশও। কিন্তু কারা কর্তব্যরত ট্র্যাফিক কর্মীকে মিথ্যে খবর দিলেন এবং কেনই বা দিলেন, সেটাও ভাবাচ্ছিল পুলিশকে। পরে জানা গিয়েছে, ওই সংস্থারই ছাঁটাই হওয়া কয়েক জন কর্মীর কারসাজি এটি।