ছবি সংগৃহীত।
সোমবার দুপুরে গড়িয়াহাট থানা এলাকায় এক কিশোরের বেধড়ক মারে অপর এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় অভিভাবকদের ভাবিয়ে তুলছে অপ্রাপ্তবয়স্ক মনের মাত্রাছাড়া রাগের বিষয়টি। ১৪ বছরের ওই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, বর্তমানে ছোটদের মধ্যে কি অসহিষ্ণুতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে? শহরের মনোরোগ চিকিৎসক ও মনোবিদেরা মনে করছেন, ছোটদের মধ্যে আজকাল এমনিতেই আগ্রাসী মনোভাব বাড়ছে। কোভিড পরিস্থিতি সেই রাগের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে টিভি এবং স্মার্টফোনের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তিও তাদের ধৈর্য দিনদিন কমিয়ে দিচ্ছে।
এ দিন গড়িয়াহাটের ডোভার টেরেসের ঘটনা প্রসঙ্গে মনোরোগ চিকিৎসক ও মনোবিদেরা মনে করছেন, সম্ভবত পরিবেশগত কারণেই অভিযুক্ত কিশোরের মধ্যে রাগের মাত্রা খুব বেশি। মনোরোগ চিকিৎসক অনিরুদ্ধ দেবের কথায়, “১৯৭০ সালে একটি সিনেমা হয়েছিল ‘এফ অ্যান্ড সুপার এফ’, যেখানে বলা হয়েছিল, জনসংখ্যা যেখানে বেশি, সেখানকার মানুষের মধ্যে রাগও বেশি হয়। আর তার সত্যতা কিন্তু বাস্তবেও দেখা যাচ্ছে। তার সঙ্গে রয়েছে পারিপার্শ্বিকের প্রভাব। এ দিন যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি বস্তি। অর্থাৎ, সেখানে মানুষ প্রতিনিয়ত লড়াই করে বাঁচেন। ফলে সেখানে লড়াই করতে করতে অনেকে ছোট থেকেই রূঢ় হয়ে ওঠে। হিংস্রতাও জন্ম নেয়।” তবে তিনি এ-ও বলছেন, ‘‘এমন হতেই পারে যে, ওই কিশোর মারার সময়ে বুঝতে পারেনি সে খুন করে ফেলবে।’’
আবার মনোরোগ চিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করছেন। তাঁর বক্তব্য, “মানুষের রাগ থাকবেই। কিন্তু সেটির বহিঃপ্রকাশ যে মারধর নয়, সেটি ছোট থেকেই বোঝানো প্রয়োজন। তবে পরিবেশ এ ক্ষেত্রে অনেকটা বড় ছাপ ফেলে। যে জায়গায় কেউ থাকছে, সেখানকার আশপাশের লোকজনের পাশাপাশি বাবা-মায়ের আচরণের প্রভাবও সন্তানের উপরে পড়ে।”