কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
বকেয়া সম্পত্তি করে ছাড় এ বার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে ছাড় যে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, বিষয়টি তেমন নয়। কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, কর ছাড়ের সুবিধা পুরোপুরি তুলে দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। কিন্তু ছাড়ের সুবিধা থাকা সত্ত্বেও যাঁরা বছরের পর বছর সম্পত্তি কর ইচ্ছাকৃত ভাবে দেননি, তাদের জন্য কর ছাড়ে সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিন্যাস রাখার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে গিয়েছে। নতুন আর্থিক বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। আগে যেমন সম্পত্তি করে বকেয়া মেটানোর জন্য একই পরিমাণ ছাড় দেওয়া হত, এ বার আর তেমনটা থাকছে না। দু’বছর পর্যন্ত সম্পত্তি কর বকেয়া আছে, এমন করদাতারা জরিমানার ৯৯ শতাংশ এবং সুদের ৫০ শতাংশ ছাড় পাবেন। দু’বছরের বেশি কিন্তু পাঁচ বছরের কম সময়ের বকেয়া কর মেটালে জরিমানায় ৭৫ শতাংশ এবং সুদে ৪৫ শতাংশ ছাড় মিলবে। ৫ বছর থেকে ১০ বছর বকেয়া আছে, এ সব ক্ষেত্রে করদাতাদের জরিমানার উপর ৫০ শতাংশ এবং সুদের উপর ৩৫ শতাংশ মকুব করা হবে। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে যাঁরা কর বকেয়া রেখেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে জরিমানার উপর ২৫ শতাংশ এবং সুদের উপর ৩০ শতাংশ ছাড় মিলবে।
আগামী অর্থবর্ষ থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানা গিয়েছে। পুর আইন অনুসারে ২০১৮ সাল থেকে এই ছাড় দেওয়া হচ্ছিল। সম্পত্তি কর মূল্যায়ন এবং রাজস্ব আদায় বিভাগ সূত্রে খবর, গত চার-পাঁচ বছরে এই পদ্ধতিতে কোষাগারে ভাল পরিমাণ টাকা (করের অর্থ) এলেও বকেয়ার বড় অংশ এখনও আসেনি। পুর আধিকারিকদের আশা ছিল, ছাড়ের সুবিধা পেলে সম্পত্তি করের বকেয়া মোটানোয় উৎসাহ দেখাবেন কলকাতাবাসী। কিন্তু ছাড় ঘোষণার সময়সীমা প্রায় ছ’বছর দীর্ঘায়িত করলেও সে ভাবে ফল মেলেনি। তাই এ বার সম্পত্তি করের বকেয়ার সময়সীমা অনুযায়ী ছাড় নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নতুন এই পদ্ধতিতে কলকাতা পুরসভার কর আদায় বৃদ্ধি করাই লক্ষ্য মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। তাই ছ’বছর পর বকেয়া সম্পত্তি কর আদায়ের নতুন পদ্ধতিতে কলকাতা পুরসভা সফল হয় কিনা, তা নিয়ে সংশয় থাকছে বলে মনে করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।