—প্রতীকী চিত্র।
গার্হস্থ্য হিংসা এবং যৌন নির্যাতনের শিকার এক মহিলা অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন থানায়। কিন্তু তিনি দেখেন, উপস্থিত পুলিশকর্মীরা সকলেই পুরুষ। তাঁদের কারও কাছে কী ভাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান অভিযোগকারিণী। তখনই থানায় এক মহিলা অফিসারকে ঢুকতে দেখে হাঁফ ছাড়েন তিনি। ওই অফিসারের সঙ্গে কথা বলে নিজের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে সে দিন থানা ছেড়েছিলেন অভিযোগকারিণী।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু ওই মহিলা নন, থানায় গিয়ে শুধু পুরুষ পুলিশকর্মীদের দেখে অনেক মহিলাই অভিযোগ না জানিয়ে চলে যান। এমন অবস্থায় যাতে মহিলাদের আর পড়তে না হয়, তার জন্য কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানায় ‘মহিলা সহায়তা কেন্দ্র’ চালু করা হল। এই কেন্দ্র আগে যে সব থানায় ছিল, সেগুলি নতুন করে চালু করতে বলা হয়েছে লালবাজারের তরফে।
সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারেরা থানাগুলিকে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে এমন ‘মহিলা সহায়তা কেন্দ্র’ চালু করতে বলেন। থানায় সেরেস্তার পাশেই গত রবিবার থেকে ওই সহায়তা কেন্দ্র চালু হয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
বন্দর বিভাগের একটি থানার আধিকারিক জানান, ওই নির্দেশ মেলার পরেই এক জন মহিলা অফিসারকে দিয়ে ওই সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। থানায় সাহায্যের জন্য বা অভিযোগ জানাতে আসা মহিলারা সহায়তা পাচ্ছেন মহিলা অফিসার বা পুলিশকর্মীদের থেকে। দক্ষিণ শহরতলির একটি থানার আধিকারিক জানান, সেখানে ‘মহিলা সহায়তা কেন্দ্র’ নতুন করে চালু করা হয়েছে। মূলত অপরাধের শিকার মহিলাদের আইনি পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে সেখান থেকে।
লালবাজার জানিয়েছে, প্রতিটি থানায় এখন এক জন করে মহিলা সাব ইনস্পেক্টর এবং একাধিক মহিলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর রয়েছেন। তাঁদের সাহায্য করার জন্য মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারেরা রয়েছেন প্রতিটি থানায়। ফলে দিনে বা রাতে থানায় আসা মহিলাদের সাহায্য করতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।
কলকাতা পুলিশের ন’টি ডিভিশনে একটি করে মহিলা থানা তৈরি করা হয়েছে শুধু মহিলাদের অভিযোগের তদন্ত করার জন্য। তার পরেও কেন প্রতিটি থানায় ‘মহিলা সহায়তা কেন্দ্র’ তৈরির প্রয়োজন হল? লালবাজারের এক কর্তা জানান, সাধারণ ভাবে কোনও অপরাধের বিচার চাইতে মহিলারা প্রথমে স্থানীয় থানায় যান। পরে সেখান থেকে বিষয়টি পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের মহিলা থানায়। স্থানীয় থানাগুলিতে ওই সহায়তা কেন্দ্র তৈরির ফলে মহিলারা যেমন অভিযোগ জানাতে স্বাছন্দ্য বোধ করবেন, তেমনই কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে।