—প্রতীকী চিত্র।
পশুদের জন্য আরও উন্নত মানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বেলগাছিয়ায় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির অনুমোদন মিলেছিল ২০০৯ সালে। কথা ছিল, চারতলা হাসপাতাল তৈরি করা হবে। দীর্ঘ টালবাহানার পরে মাস দেড়েক আগে ওই হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধনও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, উদ্বোধন হলেও ২৪ ঘণ্টার পরিষেবা নেই সেখানে। বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্রিটিশ আমল থেকে যে পশু হাসপাতাল চালু রয়েছে, সেটি নয়া হাসপাতাল ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে শুধু। এ বিষয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পার্থ দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘ ৪০ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন অবস্থায় চলছে। একটি ২৪ ঘণ্টার পশু হাসপাতাল চালাতে গেলে যে পরিকাঠামো দরকার, তা গড়ে তুলতে মোটা টাকার প্রয়োজন। নতুন উপাচার্য না আসায় বিভিন্ন কাজে সমস্যা হচ্ছে। উপাচার্য কাজে যোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রস্তাব পাঠানো হবে।’’
গত মে মাসের শেষে চারতলার পরিবর্তে ওই দোতলা হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, তদানীন্তন বিদায়ী উপাচার্য ভবনটির উদ্বোধন করে যান। প্রাণীদের উন্নত মানের চিকিৎসার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাযুক্ত হাসপাতালের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ব্রিটিশ আমল থেকে চলা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ওই হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার সুবিধা মেলে একমাত্র বহির্বিভাগে। তা-ও সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত। তবে তা যে যথেষ্ট নয়, বহু দিন ধরেই সেই অভিযোগ করে আসছিলেন শহরের পশুপ্রেমীরা। সেই কারণেই ২০০৯ সালে বেলগাছিয়া প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আধুনিক মানের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি করতে প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দফতর বিশ্ববিদ্যালয়কে দশ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। কিন্তু তার পরেও লাল ফিতের ফাঁসে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতাল ভবন তৈরির কাজ আটকে ছিল। ১৪ বছর পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবন হাতে পেলেও ২৪ ঘণ্টার পরিষেবা দেওয়ার কাজ চালু করতে পারলেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দফতরের গড়িমসির কারণেই এখনও পূর্ণাঙ্গ পরিকাঠামো-সহ হাসপাতাল গড়ার কাজ সম্পূর্ণ হল না। যদিও প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বললেন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন আধুনিক মানের পশু হাসপাতাল তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ওই প্রস্তাব কতটা বিবেচনার বিষয়, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার।’’ প্রাণীদের জন্য ২৪ ঘণ্টার হাসপাতাল আদৌ চালু হবে কি না, সে বিষয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ। যদিও সেখানকার বর্তমান রেজিস্ট্রার আশ্বস্ত করে জানান, নতুন উপাচার্য কাজে যোগ দিলেই হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের উপরে জোর দেওয়া হবে।