ঘর হারানোর আশঙ্কায় আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা

পুলিশ সূত্রের খবর, বেহালার উপেন ব্যানার্জি রোডে এক বৃদ্ধ দম্পতি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে খবর যায় পর্ণশ্রী থানায়। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০২:১০
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজেদের বাড়ির তিনটি তলই বিক্রি করে দিয়ে ছাদে অ্যাসবেস্টসের ঘরে থাকছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। অভিযোগ, সেই ঘর এবং ছাদটাও তাঁকে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন ওই বাড়ির তিনতলার মালিক। মঙ্গলবার দুপুরে সেই মানসিক চাপেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করলেন বেহালা জিঞ্জিরাবাজারের বাসিন্দা ওই দম্পতি। প্রতিবেশীদের সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে। বর্তমানে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বেহালার উপেন ব্যানার্জি রোডে এক বৃদ্ধ দম্পতি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে খবর যায় পর্ণশ্রী থানায়। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওই দম্পতি জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে এ দিন সকালে তাঁরা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পরিচারিকা এসে বুঝতে পেরে চিৎকার শুরু করেন। তাতেই প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে পুলিশকে জানান। এক তদন্তকারী আধিকারিকের কথায়, ‘‘কী কারণে আত্মহত্যার চেষ্টা তা স্পষ্ট নয়। বৃদ্ধ বলেছেন, তিনতলা যিনি কিনেছেন, তিনিই ছাদ ও ছাদ সংলগ্ন ঘরটি তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, প্রায় আড়াই কাঠা জায়গার উপরে বাড়িটি। বছর কয়েক আগে ওই নিঃসন্তান দম্পতি একতলা বিক্রি করে দোতলা করেন। পরে দোতলাও বিক্রি করে দিয়ে তিনতলা এবং উপরে ছাদের ঘরটি তৈরি করেন তাঁরা। সেই তিনতলা বিক্রি করে ছাদের ঘরেই পাকাপাকি ভাবে উঠে যান দম্পতি। বৃদ্ধের দাবি, ওই ছাদের ঘর লিখে দেওয়ার জন্য কিছু দিন ধরে তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন তিনতলার মালিক উমেশ যাদব নামে এক ব্যক্তি। একতলার বাসিন্দা রামরতী ভুঁইয়ার অবশ্য দাবি, ‘‘ছাদের ঘরটি ওঁরা বিক্রি করে চলে যাবেন বলছিলেন। সে জন্যই হয়তো উমেশ কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই ঘর দেখতে লোকও এসেছিলেন।’’

Advertisement

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, রংহীন ছাদের ঘরে আসবাব ছড়ানো। কোনও মতে দিন গুজরানের চিত্র স্পষ্ট। তিনতলার ফ্ল্যাটের মালিক উমেশের দেখা মেলেনি এ দিন। স্থানীয় সূত্রের খবর, তিনতলার ফ্ল্যাটটিতে প্রীতম সুকুল নামে এক যুবক ভাড়ায় থাকেন। প্রীতম বলেন, ‘‘ছাদের ঘর কেনা নিয়ে উমেশবাবুর সঙ্গে কী ঝামেলা হয়েছে বলতে পারব না। কিন্তু এতগুলো ফ্ল্যাট বিক্রির পরেও ছাদের ঘরটা ওই দম্পতি বিক্রি করতে চাইছেন শুনেছিলাম।’’ পর্ণশ্রী থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘দম্পতি সুস্থ হলে গোটা বিষয়টি জানার চেষ্টা করা হবে। আত্মীয়দের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। সত্যিই কোনও অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement