অপেক্ষারত যাত্রীরা।—ফাইল চিত্র।
ট্রেনে ওঠার অপেক্ষায় প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। অথচ, নির্দিষ্ট স্টেশনে না থেমেই বেরিয়ে গেল ট্রেন! শেষ পর্যন্ত এক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে তা থামল পরের স্টেশনে। আর যে স্টেশনে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন ট্রেনে উঠবেন বলে, পরের ট্রেনের জন্য তাঁদের অপেক্ষা করতে হল পাক্কা ২০ মিনিট। এক বার নয়, একই দিনে এমন ঘটল দু’বার। সন্ধ্যা ৭টা ৪৩ মিনিটের একটি ট্রেন সেন্ট্রাল পার্ক স্টেশনে না থেমে করুণাময়ীতে গিয়ে থামে।
শুক্রবার এমনই ঘটেছে সদ্য চালু হওয়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয়। সল্টলেক স্টেডিয়াম থেকে সেক্টর ফাইভগামী মেট্রোয় পরপর দু’বার এমন ঘটনায় হতবাক যাত্রীরা তো বটেই, মেট্রোকর্তারাও। পুরো বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে তাঁরা।
এমনকি, সকালে সল্টলেক স্টেডিয়াম স্টেশন থেকে যাত্রা শুরুর আগে মেট্রোয় আর এক দফা বিভ্রাট হয় বলেও অভিযোগ। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ানোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ট্রেনটি আচমকা ছেড়ে দেয়। তখনও যাত্রীরা ওঠেননি ট্রেনে। বিষয়টি নজরে আসতেই তৎপর হয়ে ওঠেন মেট্রোকর্মীরা। ট্রেনটিকে ফের প্ল্যাটফর্মে ফিরিয়ে আনা হয়। তার পরে নির্দিষ্ট সময়ে সেটি রওনা হয় সেক্টর ফাইভের উদ্দেশে। এর ঠিক পরপরই ফের বিপত্তি। দ্বিতীয় স্টেশন বেঙ্গল কেমিক্যালে থামেইনি সেই ট্রেন।
এত ঘটা করে পরিষেবা চালুর কয়েক দিনের মধ্যেই এমন ভুলভ্রান্তিতে বেজায় অস্বস্তিতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, চালকদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় পিছিয়ে দিতে হয়েছিল নতুন মেট্রোর উদ্বোধন। এ দিনের ঘটনায় চালকদের প্রস্তুতি নিয়ে ফের আর এক দফা প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘লাইনের উপরে ট্রেন ছোটানোর থেকেও তা নির্দিষ্ট জায়গায় থামানোর শিক্ষা চালকদের ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেন এবং কোন পরিস্থিতিতে এমন ঘটল, সেই খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো থেকে চালকদের নিয়ে গিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য নাগাড়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। প্রশিক্ষণের জন্য কয়েক জনকে বেঙ্গালুরুও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও এমন ঘটনায় অস্বস্তি ঢাকতে পারছেন না মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় ট্রেন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে স্বয়ংক্রিয় হলেও তা এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। শিয়ালদহ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হলে ওই ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব হবে। মেট্রোকর্তাদের দাবি, সে ক্ষেত্রে এমন বিপত্তি ঘটার আশঙ্কা অনেকটাই কমবে।