—প্রতীকী চিত্র।
প্রবল শব্দে দেদার ফাটছে বাজি। দরজা, জানলা বন্ধ করেও নিস্তার পাচ্ছেন না প্রবীণেরা। কোথাও আবার বাজি থেকে আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে আগুন লাগছে, কখনও বাজি ফাটাতে গিয়ে কেউ আহত হচ্ছেন। সরকারি নির্দেশিকা, পুলিশি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নিষিদ্ধ শব্দবাজির তাণ্ডব আর বাজি থেকে দুর্ঘটনার ঘটনা পুরোপুরি থামানো যায়নি। তাই এ বার শব্দবাজির দৌরাত্ম্য ঠেকাতে পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি পথে নামছে উত্তর দমদম পুরসভাও।
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, কালীপুজোর আগে শব্দবাজি রুখতে প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতার প্রচার চালানো হবে। বাসিন্দাদের দেওয়া হবে হেল্পলাইন নম্বরও। এর পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় ভাবে একটি নজরদারি দলও তৈরি করা হচ্ছে। সেই দল বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে এলাকা পরিদর্শনে যাবে। কোথাও কোনও অভিযোগ পেলে দ্রুত তা পুলিশকে জানানো হবে। এক পুর কর্তার কথায়, ‘‘সরকারি নিয়ম ভঙ্গ হলে, মানুষের অসুবিধা হওয়ার কথা নজরে এলে কিংবা অভিযোগ এলে পুর কর্তৃপক্ষ পুলিশ প্রশাসনকে জানাবে। তবে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে সচেতনতার উপরে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, প্রশাসনিক পদক্ষেপ সত্ত্বেও লুকিয়ে শব্দবাজি (নির্ধারিত মাত্রার বেশি) ফাটানোর ঘটনা ঘটছে। তাঁদের কথায়, ‘‘বাজি তৈরি বন্ধ না করে স্থানীয় স্তরে নজরদারি বা আইনি পদক্ষেপ করলে শব্দবাজি হয়তো কিছুটা আটকানো যাবে, কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হবে কী? উপরন্তু ১২৫ ডেসিবেল শব্দের অভিঘাত কম নয়।’’
স্থানীয় স্তরে ক্লাব বা সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে একযোগে সচেতনতার
প্রচারে জোর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন তাঁরা। উত্তর দমদমের বাসিন্দা বিমান গুপ্তের কথায়, ‘‘অনেকেই শব্দবাজি ফাটলে অভিযোগ জানাতে সাহস করেন না। পুরসভা নিজেই এগিয়ে এলে অনেকেই উৎসাহ পাবেন।’’ অনেকেই মনে করছেন, উত্তর
দমদমের মতো বড় এলাকায় সর্বত্র নজর রাখা বা কোনও ঘটনা ঘটলে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামলানো মুশকিল। সে ক্ষেত্রে শুধু পরিকল্পনায় সীমাবদ্ধ না থেকে প্রকৃতপক্ষে পুরসভা পথে নামলে সেই কাজে গতি বাড়বে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, এম বি রোড-সহ পুর এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় নজরদারি চলছে। কালীপুজোয় এই নজরদারি আরও বাড়বে। উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, ‘‘দূষণ ঠেকাতে সকলে মিলে চেষ্টা চালাতে হবে। পুরসভা প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতার প্রচার থেকে শুরু করে নজরদারি চালাবে।’’