লক্ষ্মীর ভোগে ভরসা প্যাকেটের নাড়ু

বারাসত স্টেশনের কাছে বড়বাজারে দেখা গেল, দশকর্মার দোকানে ভিড় উপচে পড়ছে নাড়ুর প্যাকেট কেনার জন্য। এক একটি প্যাকেটে ১০টি নাড়ু। দাম ১২ থেকে ১৫ টাকা।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫৭
Share:

বাজারে প্যাকেটবন্দি নারকেল ও তিলের নাড়ু। নিজস্ব চিত্র

এ যেন নাড়ুশিল্প

Advertisement

একে দাম বেড়েছে নারকেলের। আবার নারকেল কুরিয়ে, আঁচে চড়িয়ে, গোল্লা পাকিয়ে নাড়ু তৈরির ঝক্কিও কম নয়। কিন্তু চিনি বা গুড় দিয়ে তৈরি নারকেলের নাড়ু ছাড়া বাঙালির লক্ষ্মীপুজো হয় নাকি! উপায়ন্তর না দেখে তাই প্যাকেটবন্দি নারকেল নাড়ুর চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে। প্যাকেট করা নারকেলের নাড়ু বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে। নাড়ুর জোগান দিতে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত সংলগ্ন এলাকায় ঘরে ঘরে নারকেলের নাড়ু বানাচ্ছেন মহিলারা। সেখান থেকেই প্যাকেটবন্দি নাড়ু চলে যাচ্ছে কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন বাজারেও।

বারাসত স্টেশনের কাছে বড়বাজারে দেখা গেল, দশকর্মার দোকানে ভিড় উপচে পড়ছে নাড়ুর প্যাকেট কেনার জন্য। এক একটি প্যাকেটে ১০টি নাড়ু। দাম ১২ থেকে ১৫ টাকা। কালিপদ সাহা নামে এক দোকান মালিক বলেন, ‘‘শহরের দিকে আর কেউ বাড়িতে নাড়ু বানাতে চান না। সময়ও নেই। সে জন্যই আগাম নাড়ু তৈরি করে প্যাকেটে ভরে রাখতে হয়।’’

Advertisement

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে নাড়ুর চাহিদার জোগান দিতে দুর্গাপুজোর সময় থেকেই বারাসত ছাড়াও বামনগাছি, দত্তপুকুরের ঘরে ঘরে মহিলারা নাড়ু তৈরি করে প্যাকেটবন্দি করেন। অজয় সাধুখাঁ নামে এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘এই সব এলাকার মহিলাদের তৈরি সেই নাড়ুই আমরা দোকানে খুচরো ও পাইকারি ভাবে বিক্রি করি। এখান থেকে নাড়ু চলে যায় কলকাতার বিভিন্ন বাজারেও।’’

শুক্রবার বারাসতের বাজারে নারকেল কিনতে এসেছিলেন সুস্মিতা দাস। তাঁর কথায়, ‘‘লক্ষ্মীপুজোয় বাড়িতে নারকেলের নাড়ু তৈরির ইচ্ছে ছিল। কিন্তু নারকেলের দাম দেখে পিছিয়ে গেলাম। এর পরে নাড়ু তৈরির হাজার ঝক্কি তো রয়েছেই। তাই নাড়ুর প্যাকেটই কিনে নিলাম।’’

যদিও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, নারকেল বিকোচ্ছে বেশ চড়া দামেই। ছোবড়া ছাড়ানো ছোট ছোট নারকেলও ২০ টাকার কমে বিক্রি হচ্ছে না। বড় নাকেলের দাম পৌঁছেছে ৪০ টাকায়। তা সত্ত্বেও নারকেল কেনায় কোনও ঘাটতি নেই। সামনেই ছটপুজো। তাই ভিন্‌রাজ্য থেকে চড়া দামেই নারকেল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।

দেগঙ্গার হাটে গিয়ে দেখা গেল, ছোবড়া ছাড়ানো নারকেল ভরা হচ্ছে একটি বস্তায়। আর ছোবড়া ভরা হচ্ছে আলাদা বস্তায়। তার পরে লরিতে চেপে ছোবড়া ছাড়ানো নারকেল ওই হাট থেকে চলে যাচ্ছে বিহার, বোকারো, ধানবাদে।

খুরেশ শাহ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজোর পর থেকেই নারকেলের দর বাড়তে থাকে। ছট পুজোয় নারকেলের চাহিদা সব চেয়ে বেশি হয় বলে ভিন্‌ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা এই সব হাট থেকে নারকেল কিনে নিয়ে যান। তাই নারকেলের এত দাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement