ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি গার্ডেনরিচ উড়ালপুলে বেপরোয়া ভাবে স্কুটার চালানোয় প্রাণ গিয়েছে এক যুবকের। পুলিশের নজর এড়িয়ে ওই স্কুটারে তিন জন চেপেছিলেন। মাঝপথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের গার্ডরেলে ধাক্কা মেরে স্কুটারটি নীচে পড়ে যায়। তাতেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। এর পরেই গার্ডেনরিচ উড়ালপুলে রাতে মোটরবাইক ওঠা বন্ধ করতে ড্রপ গেট বসানোর ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে পুলিশ। উড়ালপুলের দু’দিকে ওই ড্রপ গেট বসানোর জন্য লালবাজারে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একাংশের দাবি, নিরাপদে পথচারীদের রাস্তা পারাপার করাতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ড্রপ গেট বসানো হলেও অবাধ্য বাইক আটকানোর জন্য উড়ালপুলের মুখে ড্রপ গেট বসানোর ভাবনা এই প্রথম।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে পার্ক স্ট্রিট, এজেসি বসু, মা উড়ালপুল-সহ একাধিক উড়ালপুলে রাতে বাইক চলতে দেওয়া হয় না। সেই তালিকায় ছিল গার্ডেনরিচও। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেখা গিয়েছে, পুলিশি নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে রামনগরের দিক থেকে বেপরোয়া বাইক উঠে পড়ছে। এ বার তাই ড্রপ গেট বসিয়ে রাত ন’টা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত বেপরোয়া মোটরবাইক উঠতে বাধা দেওয়া হবে। তবে একই সঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, রাতে উড়ালপুলে অন্য গাড়ি উঠতে বাধা থাকবে না। কোনও গাড়ি এলে পুলিশকর্মীরা ড্রপ গেট খুলে দেবেন। গাড়ি চলে গেলে বন্ধ করে দেবেন। উল্লেখ্য, মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরে গার্ডেনরিচ উড়ালপুল দিয়ে চলাচলকারী গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও বেশির ভাগ সময়ে ওই রাস্তা ফাঁকা থাকে। ফলে ড্রপ গেট বসালে যানজট হবে না বলেই মনে করছে পুলিশের একটি অংশ।
৪.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং চার লেনের এই উড়ালপুল যোগ করেছে গার্ডেনরিচ ও মাঝেরহাটকে। উড়ালপুলের একটি র্যাম্প রয়েছে রিমাউন্ট রোডের দিকে। দীর্ঘ ওই উড়ালপুলে নামা এবং ওঠার মুখে রয়েছে কয়েকটি স্পিড ব্রেকার। নিরাপত্তার স্বার্থে বসানো হয়েছে দশটি ক্যামেরাও। লালবাজার জানিয়েছে, উড়ালপুলের বেশির ভাগ অংশ আঁকাবাঁকা। যার মধ্যে আবার পাঁচটি বড় বাঁক রয়েছে। সূত্রের খবর, ওই বাঁকগুলির মুখে রেলিংয়ের উচ্চতা বাড়ানো না গেলেও তাতে লোহার শক্ত জাল বসানো হচ্ছে। যাতে কোনও বেপরোয়া গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারলেও উড়ালপুল থেকে নীচে পড়তে না পারে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ওই জালের উচ্চতা হবে পাঁচ ফুট। বাঁকগুলির পঞ্চাশ মিটার এলাকা জুড়ে সেগুলি বসানোর প্রস্তাব রয়েছে।
ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, উড়ালপুলে রাতে কোনও বাইক যাতে উঠতে না পারে তা দেখার জন্য দু’প্রান্তে দু’জন অফিসার এবং তিন জন করে বাহিনীর সদস্য থাকবেন। পাশাপাশি, মোটরবাইকে চেপেও সব সময়ে টহল দেবেন পুলিশকর্মীরা।