প্রতীকী ছবি
কলকাতা থেকে গাড়িতে করে দামি জামাকাপড় গিয়েছে চেন্নাইয়ে। সেখান থেকে জাহাজে দুবাই। আর কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মেনে সেই রফতানি করে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার কর ছাড় পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী।
কিন্তু, সত্যিই কি দামি জামাকাপড় পাঠানো হয়েছিল বিদেশে?
তদন্তে নেমে শুল্ক দফতরের গোয়েন্দা বিভাগ ‘ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স’ (ডিআরআই) হাতে পেয়েছে অদ্ভুত এক তথ্য। যে সব গাড়িতে করে দামি জামাকাপড় কলকাতা থেকে চেন্নাইয়ে পাঠানো হয়েছে বলে ওই ব্যবসায়ী কাগজে-কলমে দেখিয়েছেন, সেগুলির মধ্যে রয়েছে তিন চাকার অটো, চাষের কাজে লাগা ট্র্যাক্টর এবং দমকলের গাড়ি! এমনকি, যে সব সংস্থা থেকে ওই দামি জামাকাপড় কেনা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়, তার বেশির ভাগেরই কোনও অস্তিত্ব নেই!
বৃহস্পতিবার কলকাতায় মেহেদি হাসান নামে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ডিআরআই। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে তাঁর অফিস। চেন্নাই থেকে জাহাজে করে দুবাইয়ে দামি জামাকাপড় রফতানি করাই তাঁর ব্যবসা। গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে, খাতায়-কলমে দামি জামাকাপড় দেখিয়ে আদতে তিনি রফতানি করছেন রদ্দি কাপড়, সস্তার জামা। যে দাম নথিতে দেখানো হচ্ছে, তার চেয়ে আসল দাম ৫০ গুণ কম।
এ ভাবেই রফতানির কাগজ দেখিয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে ২০১৬ সালের অগস্ট ও ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় দু’কোটি টাকা এবং ২০১৭ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় তিন কোটি টাকার কর ছাড় পেয়েছেন তিনি। গোয়েন্দা-কর্তাদের অভিযোগ, খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, দুবাই বন্দরে যখন তাঁর মাল পৌঁছেছে, তখনই তিনি সেই সব মালের আসল দাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু, চেন্নাই থেকে রফতানির সময়ে তার ৫০ গুণ বেশি দাম ঘোষণা করে সরকারের কাছ থেকে কর ছাড়ের সুবিধা নিয়েছেন।
ডিআরআই সূত্রের খবর, এই ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতায় বারবার মেহেদি হাসানকে ডেকে পাঠানো হলেও তিনি আসেননি। শেষে বৃহস্পতিবার এলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।