—প্রতীকী চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ইতিমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে নতুন দু’টি পাঠক্রম— ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম মেধা। অথচ এখনও পর্যন্ত স্কুলে এর জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ। নেই বাংলায় লেখা বইও। তাই পরিকাঠামো ছাড়া এই দুই বিষয় কী ভাবে স্কুলে পড়ানো হবে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।
শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বহু ছাত্রছাত্রীই এই দু’টি নতুন বিষয় নিয়ে পড়তে উৎসাহী। বেশ কিছু স্কুল এই দু’টি পাঠক্রম চালু করার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে আবেদন করেছে। সংসদ সেই আবেদন অনুমোদনও করেছে। ওই দুই পাঠক্রম পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের উপরে যে বাংলা বই দরকার, সেই বই বাজারে নেই বললেই চলে। এর পাশাপাশি অভিযোগ, এই দু’টি বিষয় পড়ানোর জন্য যে আধুনিক কম্পিউটার প্রয়োজন, তা-ও সব স্কুলে নেই।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষকেরা ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়ানোর জন্য স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ দিনের এই প্রশিক্ষণ পর্ব চলছে ধাপে ধাপে। সারা রাজ্য থেকেই বিভিন্ন স্কুলের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষকেরা এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক চিরঞ্জীবকুমার সাহা বলেন, ‘‘আমাদের প্রশিক্ষণ খুব ভাল হয়েছে। হাতেকলমে এবং থিয়োরি— দু’টোরই প্রশিক্ষণ হয়েছে। ১৬ দিনের এই প্রশিক্ষণের পরে আমরা পড়ুয়াদের পড়ানোর জন্য প্রস্তুত। কিন্তু যারা পড়বে, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় বই কোথায়? খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বাজারে বাংলায় লেখা এই দু’টি বিষয়ের বই নেই বললেই চলে।’’
সমস্যা রয়েছে কম্পিউটারেরও। কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, যে সব স্কুল এই দুই বিষয়ে পড়াতে আগ্রহী, সেখানে কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের নতুন ভার্সন লাগবে। পাঁচ বছর আগের কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার হলে চলবে না। কিন্তু অধিকাংশ স্কুলেরই কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম নতুন নয়। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের কম্পিউটার অবশ্য একেবারে আধুনিক। তবে এই দু’টি বিষয়ের উপরে বাংলা বই না থাকা একটা বড় সমস্যা। আমাদের ১০-১২ জন পড়ুয়া এই দুই বিষয়ে পড়তে উৎসাহ দেখিয়েছে। তবে এ বছর যদি পরিকাঠামোর অভাবে শুরু করা না যায়, তা হলে আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর থেকে পড়ানো শুরু করতে পারব।’’ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, ‘‘প্রচুর পড়ুয়া উৎসাহ দেখাচ্ছে, স্কুলগুলিও উৎসাহী। পরিকাঠামো দ্রুত ঠিক করে ফেলা হচ্ছে। আপাতত ১২০টি স্কুলে আধুনিক কম্পিউটার রয়েছে। আস্তে আস্তে তা বাড়ানো হবে।’’