দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারী ফাইল চিত্র
দলীয় সতীর্থ শুভেন্দু অধিকারী কেন দিল্লি গিয়েছেন, তা তিনি জানেন না বলে সটান প্রকাশ্যে বলে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। যার জবাবে শুভেন্দু বলেছেন, দিলীপের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল। আর দিল্লি সফরের খবর তিনি লোক মারফত দিলীপকে জানিয়েই এসেছেন। যাঁকে শুভেন্দু জানিয়ে দিল্লি গিয়েছেন, তিনি দিলীপকে সে খবর দিয়েছেন কি না, তা দিলীপ এবং ওই নেতা বলতে পারবেন। কিন্তু কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে কলকাতা এবং দিল্লিতে দলের রাজ্য সভাপতি এবং বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্য এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে সবকিছু তত ‘মসৃণ’ ভাবে চলছে না।
রাজ্য নেতাদের নিয়ে মঙ্গলবার কলকাতায় বৈঠকে বসেন দিলীপ। ওই বৈঠকের আগেই সোমবার রাতে দিল্লি চলে যান শুভেন্দু। বৈঠকের আগে দিলীপকে শুভেন্দুর দিল্লি সফর নিয়ে প্রশ্ন করায় তিনি সাফ বলেন, “শুভেন্দু তো জানেন মিটিং আছে। তা-ও দিল্লি গিয়েছেন। কেন গিয়েছেন তা জানি না। দিল্লির নেতারা বলতে পারবেন।”
দিলীপের ওই মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু দিল্লিতে বলেন, ‘‘আমি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দিল্লি যাওয়ার কথা সরাসরি জানাতে পারিনি। অমিতাভ চক্রবর্তীর (রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক, সংগঠন) মারফত জানিয়ে এসেছি। দিলীপদার সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক। আমরা দু’জনেই মেদিনীপুরের ছেলে।’’
বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর এমনিতেই রাজ্য বিজেপি নেতারা বেশ চাপে। দল সরকার গড়তে না পারায় অনেকেই ‘বেসুরো’ হয়েছেন। শুভেন্দুর সঙ্গে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক। তার আগে মঙ্গলবার তিনি অমিত শাহ এবং জে পি নড্ডার সঙ্গে কথা বলেছেন। কোন বিষয়ে তিনি ওই শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন, তা নিয়েও অন্ধকারে রাজ্যের নেতারা। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারপর্বে শুভেন্দুকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের গুরুত্ব দেওয়া, অনেক আসনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাঁর মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া নিয়ে বাংলার ‘আদি’ বিজেপি নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিলই। বিশেষত, দিলীপ-অনুগামীদের অনেকে আপত্তি তুলেছিলেন। যে সব নবাগত বিজেপি-তে এসেই টিকিট পেয়েছিলেন, তাঁদের পরাজয় নিয়ে এখন সেই শিবির সরব। শুভেন্দু গেরুয়া শিবিরে যোগদানের পর যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের অনেকে এখন তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে। সে সব নিয়ে ‘আদি’ বিজেপি নেতাদের সমালোচনা চলছে। সম্প্রতি চুঁচুড়া ও আসানসোলে ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে দিলীপকে।