প্রতীকী ছবি।
দমদম মেট্রো স্টেশনের কাছে ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে একটি কুকুরকে অ্যাসিড মারার ঘটনায় চিৎপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন পশুপ্রেমীরা। কে বা কারা ওই কাজ করেছে তা জানা না থাকায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সোমবার বিকেলে চিৎপুর থানায় বসে এক পশুপ্রেমী সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। এই অভিযোগে একাধিক পশুপ্রেমী স্বাক্ষর করেছেন।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ‘পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিবারণী আইনে’ (দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু আনিম্যালস্ অ্যাক্ট, ১৯৬০) মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। ময়না-তদন্তের জন্য দেহটি বেলগাছিয়ার পশু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কুকুরকে অ্যাসিড ছুড়ে মারার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। রাস্তার সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
রবিবার সকালে ওই পথকুকুরটির গায়ে অ্যাসিড ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বিকেলে কুকুরটির মৃত্যু হয়। পশুপ্রেমীদের অভিযোগ, পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না শহরে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে একসঙ্গে ১৬টি কুকুরছানাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। পশুপ্রেমীদের আন্দোলনের জেরে সেখানকার দু’জন নার্সিং পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে তাঁরা জামিন পান।
আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, কোনও পশুকে নির্মম ভাবে মেরে ফেলার ঘটনায় ‘পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিবারণী আইন’-এ কঠোর ধারা নেই। এই আইন অনুযায়ী অভিযুক্তের সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযুক্তেরা তার আগেই জামিন পেয়ে যান। আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কুকুর বা পোষ্যের প্রতি বারবার নির্মম ঘটনার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে উপযুক্ত আইন নেই। আইনপ্রণেতারা এ বিষয়ে উদাসীন।’’ তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘ওই আইন সংশোধন করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’’