করোনা-পরিস্থিতিতে নাগরিকদের পাশে দাঁড়ল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন—নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় প্রতিদিনই কিছু মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষের চিকিৎসা চলছে বাড়িতেই। বয়স্ক এবং তার সঙ্গে কো-মর্বিডিটি রয়েছে যাঁদের, তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন বেশি। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকদের পাশে দাঁড়ল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নাগরিকদের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দেবেন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারবাবুরা। এই পরিষেবা একেবারে বিনামূল্যে।
প্রতিটি থানা এলাকায় নির্দিষ্ট কয়েকজন চিকিৎসক এই ধরনের পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। তাঁদের ফোন নম্বর থাকবে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ অফিসারদের কাছে। কোনও নাগরিক যদি শারীরিক সমস্যা নিয়ে থানায় সাহায্য চান, তা হলে পুলিশকর্মীরা ওই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন।
থানা পিছু কত জন চিকিৎসক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে নাম-ফোন নম্বর সহ সেই তালিকা তুলে দিয়েছেন আইএমএ-র রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন।
আরও পড়ুন: রাস্তায় পড়ে মৃত্যু, দেখল শহর
তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বয়স্ক নাগরিকদের বিশেষ ভাবে নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হয় পুরভার। সেখানে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি হলে আমাদের চিকিৎসকেরা উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবে। পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চিকিৎসকেরা নাগরিকদের পাশে রয়েছেন।”
পুলিশ কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, কারও শারীরিক সমস্যা হলে তাঁদের পক্ষে অনেক সময় বোঝা সম্ভব হচ্ছিল না, সেই সময় কী করা উচিত? রোগীর পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। তাঁকে এখনই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে না কি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করলেই চলবে।
অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তহীনতায় অনেক সময় নষ্ট হচ্ছিল। তার পরিণতিতে মৃ্ত্যু পর্যন্ত ঘটছে। এ কথা মাথায় রেখে পুলিশ এবং চিকিৎসকেরা যৌথ ভাবে সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করেছেন। বিশিষ্ট চিকিৎসক সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোনও ঘটনায় পুলিশ যদি মনে করেন, ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়া উচিত, তা হলে আমরা রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি বুঝে পথ বাতলে দিচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকদের পাশে থাকতে হবে সকলকেই।”
আইএমএ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে বহু মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা জানাচ্ছেন ডাক্তারবাবুদের। অনেকেই চিকিৎসকদের পরামর্শে বাড়িতে ওষুধ খেয়েই সুস্থ হচ্ছেন। এমন কি ফোন আসছে বিদেশ থেকেও।
আরও পড়ুন: মর্গের পথে রাস্তায় পড়ল করোনা-দেহ
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)