—প্রতীকী চিত্র।
ডেঙ্গির সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষণ নেই। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দু’সপ্তাহে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১২০০ ও ১৩৬৭। গত জানুয়ারি থেকে পয়লা অক্টোবর পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৭৪২২ জন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণ কলকাতার গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজ এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ অন্য বছর তেমন ভাবে বাড়ে না। কিন্তু, এ বছর জানুয়ারি থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর বরোর অন্তর্গত ওই সব এলাকায় ডেঙ্গিতে মোট ২১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত বছরের মতো এ বারও দক্ষিণ কলকাতায় ডেঙ্গি সংক্রমণের হার বেশি। এর মধ্যে অন্য বছর গার্ডেনরিচ এলাকায় ডেঙ্গির হার কম থাকলেও এ বার সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।’’
কলকাতায় চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১২ জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনই দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, সাত নম্বর বরো ছাড়াও ১০ থেকে ১৪ নম্বর বরো এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ডেঙ্গিতে সর্বাধিক আক্রান্ত হয়েছেন ১০ নম্বর বরো এলাকার বাসিন্দারা। শুধুমাত্র ওই বরো এলাকাতেই ডেঙ্গিতে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এর পরেই রয়েছে ১২ নম্বর বরো এলাকা। ১০ নম্বর বরোর অধীনে রয়েছে ৮১, ৮৯, ৯১, ৯২, ৯৩, ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭, ৯৮, ৯৯ ও ১০০ নম্বর ওয়ার্ড। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ১০ নম্বর বরোর অধীন সব ওয়ার্ডেই ডেঙ্গির দাপট অব্যাহত। তবে তাদের মধ্যে সব থেকে বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬, ৯৭, ৯৮ ও ৯৯ নম্বর ওয়ার্ড। ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
বারো নম্বর বরোর অধীনস্থ ১০২ ও ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার বেশি বলে জানাচ্ছেন পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। গত বছরে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছিল। এ বছর ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘা যতীন এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। মাসখানেক আগে সেখানকার বাসিন্দা এক তরুণী গৃহবধূ সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন।
তবে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গি সংক্রমণ বাড়লেও উত্তর কলকাতায় এর দাপট তুলনায় কম। পুরসভার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, উত্তর কলকাতার তিন নম্বর বরো এলাকা ছাড়া অন্য বরোগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশ কম। যেমন, পুরসভার দু’নম্বর বরো এলাকায় চলতি বছরের ১ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ২৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সপ্তাহ দুয়েক আগে বৃষ্টি হয়েছিল। তার দু’সপ্তাহ পরেই ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই বংশবিস্তার করে থাকে। চলতি মাসটা সাধারণ মানুষকে সাবধানে থাকার আবেদন জানাচ্ছি।’’ তবে নভেম্বর পড়লে ডেঙ্গির দাপট কমবে বলে আশাবাদী পুরসভার পতঙ্গবিদেরা।