নোটের চোটে কম দামেই বিয়ের ফুল

বাজারে বড় নোট রয়েছে। কিন্তু অভাব একশো টাকার নোটের। তার জেরে মাছ-সব্জির দাম যখন চড়ছে, তার উল্টো ছবিটা ফুলের বাজারে। খুচরোর অভাবে বিয়ের মরসুম শুরু হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ফুলের দামের সূচক স্থির হয়ে রয়েছে বলেই দাবি ফুল ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৬ ২৩:৪৯
Share:

বাজারে বড় নোট রয়েছে। কিন্তু অভাব একশো টাকার নোটের। তার জেরে মাছ-সব্জির দাম যখন চড়ছে, তার উল্টো ছবিটা ফুলের বাজারে। খুচরোর অভাবে বিয়ের মরসুম শুরু হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ফুলের দামের সূচক স্থির হয়ে রয়েছে বলেই দাবি ফুল ব্যবসায়ীদের। তার জেরে সাধারণ ক্রেতার মনে শান্তি থাকলেও, ফুলচাষি বা ফুল ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন। ফুলের ব্যবসা কমে গিয়েছে প্রায় তিরিশ শতাংশ।

Advertisement

প্রথম বিয়ের মরসুমে ফুল ব্যবসা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধাক্কা খেয়েছিল। চাষি ও ব্যবসায়ীদের দাবি, বিয়ের দ্বিতীয় মরসুমে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে নোট বদলের চক্করে পড়ে। ক্রেতা, চাষি বা ব্যবসায়ী— টাকা ভাঙিয়ে দিতে অপারগ সকলেই। ফলে কম দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষি, ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার ছিল বিয়ের দিন। বিয়েতে গোলাপ, গাঁদা আর রজনীগন্ধা— এই তিন ধরনের ফুলের চাহিদা থাকে। তা সত্ত্বেও অন্যান্য বছরে এই সময়ে ওই সব ফুলের যা দাম থাকে, এ বছর তার থেকে দেড়শো-দু’শো টাকা কম দরে ফুল বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ফুলচাষিরা। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল, তা উসুল করার কোনও সুযোগ আপাতত আর নেই বলেই জানাচ্ছে মল্লিকঘাট ফুলবাজার।

Advertisement

এ দিন বিয়ে উপলক্ষে গোলাপ (৪০০ টাকা প্রতি ১০০টির দাম), গাঁদা (৭০ টাকা প্রতি কিলো) ও রজনীগন্ধা (২০০ টাকা প্রতি কিলো) দরে বিক্রি হয়েছে। নোট বদলের বাজারে এটাই সর্বাধিক দাম বলেই দাবি ফুলচাষিদের।

হাওড়ার মল্লিকঘাট ফুলবাজারের ব্যবসায়ী গৌরীশঙ্কর ঘাঁটা জানান, বর্ষার কারণে ফুলের ক্ষতি হয়েছে। তাই ফুলের যোগান কম। বিয়ের মরসুমে ফুলের চাহিদা থাকলেও বাদ সেধেছে খুচরোর অভাব। তাই ক্রেতারা অনেক সময় ফিরে যাচ্ছেন। গৌরীবাবুর কথায়, ‘‘হিমঘরে ফুল সংরক্ষণের ব্যবস্থা এ রাজ্যে নেই। ক্রেতা ফিরে গেলে ফুল নষ্ট হবে। তাতে চাষিদেরই ক্ষতি। ফলে আমরা বাধ্য হচ্ছি কম দামে ফুল বিক্রি করে দিতে।’’

ব্যবসায়ীরা জানান, রাজ্যে ফুলের ব্যবসার সবচেয়ে বড় বাজার মল্লিকঘাট। সেখানে নগদেই কারবার চলে। চাষি ও ব্যবসায়ী— খুচরোর সমস্যায় ভুগছেন দু’তরফই। নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলি থেকে চাষিরা ব্যবসা করতে কলকাতায় আসেন। গাড়িভাড়া-সহ অন্যান্য খরচের পরে কম দামে ফুল বিক্রি করে চাষিরা পোষাতে পারছেন না। ফলে অনেকেই হয় নিজেদের জেলায় ধারে ব্যবসা করছেন। নয়তো ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন,‘‘পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সমস্যাটা সার্বিক। সামনের সপ্তাহে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে আমাদের সমস্যার কথা জানিয়ে বার্তা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement