প্রতীকী ছবি
লকডাউনে স্কুল বন্ধ অনির্দিষ্ট কালের জন্য। অনলাইনে ক্লাস হলেও তাতে স্কুলের কোনও পরিকাঠামো ব্যবহার করছে না পড়ুয়ারা। এই যুক্তি দেখিয়ে স্কুলের টিউশন-ফি অর্ধেক করার দাবি তুললেন শহরের বেশ কিছু আইসিএসই এবং সিবিএসই স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা। স্কুল বন্ধ থাকাকালীন স্কুলবাসের ভাড়াও গুনতে নারাজ তাঁরা। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকেরা।
করোনা পরিস্থিতিতে বেসরকারি স্কুলগুলির কাছে এ বছর ফি বৃদ্ধি না-করার আবেদন জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তাতে সাড়া দিয়ে শহরের বেশির ভাগ স্কুলই ফি বৃদ্ধি করেনি। কিন্তু অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রায় দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে স্কুলে ক্লাস হচ্ছে না। অথচ, পুরো টিউশন-ফি নিচ্ছে স্কুল। এমনকি, স্কুলবাসে না চাপলেও বাসভাড়া গুনতে হচ্ছে।
নিউ টাউন স্কুল, ডিপিএস মেগাসিটি-সহ বেশ কিছু স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা জানান, স্কুলে প্রতি বছরই ইলেকট্রিসিটি ফি, ল্যাবরেটরি ফি, কম্পিউটার ফি, লাইব্রেরি ফি-সহ বেশ কিছু টাকা বছরের প্রথমেই দিয়ে দিতে হয়। এখন তো সে সবের কিছুই পড়ুয়ারা ব্যবহার করছে না। তা হলে কেন সেই সব ফি-র পুরোটা দিতে হবে? এক অভিভাবকের কথায়, “টিউশন ফি-র পুরোটা কেন দেব? অনলাইন ক্লাস তো হচ্ছে সারা দিনে এক কি দু’ঘণ্টা।’’
বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, স্কুল হচ্ছে না বলে টিউশন ফি অর্ধেক করা কার্যত অসম্ভব। নিউ টাউন স্কুলের ডিরেক্টর সুনীল আগরওয়াল বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা স্কুলবাসের ভাড়া ৩০ শতাংশ কমিয়েছি। জ্বালানির খরচটা শুধু লাগছে না। কিন্তু চালক ও বাসকর্মীদের বেতন তো দিতে হচ্ছে। তাই পুরো বাসভাড়ায় ছাড় দেওয়া কঠিন। এ ছাড়া, স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়া-সহ অন্যান্য খরচ প্রায় একই রয়েছে। তাই ফি কী ভাবে অর্ধেক হবে?”
প্রায় একই বক্তব্য ডিপিএস মেগাসিটি-র কর্মকর্তা বিজয় আগরওয়ালের। তিনি বলেন, “আমরাও বাসভাড়া ৩০ শতাংশ কমিয়েছি। তবে স্কুল চালানোর অন্যান্য খরচ প্রায় একই থাকায় টিউশন ফি কমানো কঠিন।” সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানির বক্তব্য, “স্কুলবাসের ভাড়া বা স্কুলের ফি কী হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের প্রিন্সিপাল মৌসুমী সাহার দাবি, “ফি আমরা বাড়াইনি। এই পরিস্থিতিতে ফি দিতে যাঁদের অসুবিধা হচ্ছে, তাঁদের বলা হয়েছে, পরে দিলেও হবে। আমাদের অনলাইন ক্লাস চলছে স্কুলের পুরো সময় ধরে। রোল কল থেকে শুরু করে সবই হচ্ছে। শিক্ষিকাদের বেতন-সহ স্কুল চালানোর সব খরচ কিন্তু একই রয়েছে। তাই যে ক’মাস পড়ুয়ারা আসবে না, সেই মাসগুলির জন্য ফি অর্ধেক করা খুব কঠিন।”