প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ তুঙ্গে থাকার সময়ে রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া, কারও বাড়িতে অক্সিজেন বা ওষুধ পৌঁছে দেওয়া-সহ বিভিন্ন জরুরি পরিষেবা চালু করেছিল অ্যাপ-ক্যাব এবং হলুদ ট্যাক্সির একাধিক সংগঠন। বর্তমানে সংক্রমণ নামতে শুরু করায় সেই চাহিদা কমছে। পাশাপাশি, কড়া বিধিনিষেধ চলায় পথে লোকসংখ্যাও কম। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন অ্যাপ-ক্যাব এবং হলুদ ট্যাক্সির চালকেরা। ট্রিপ সম্পূর্ণ করে নতুন যাত্রীর খোঁজে তাঁদের যতটা পথ পেরোতে হচ্ছে, তাতে অনেক তেল পুড়ছে। সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে ডিজ়েলের মূল্য লিটার প্রতি প্রায় ৯০ টাকা ছোঁয়ায়। তাই ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে এআইটিইউসি অনুমোদিত ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালকদের সংগঠন। অন্যান্য একাধিক সংগঠনও মনে করছে, ভাড়ার পুনর্বিন্যাস জরুরি।
১৫ জুনের পরে রাজ্যে গণপরিবহণে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা। অতিরিক্ত ৩৩ জোড়া ট্রেন কয়েক দিনের মধ্যেই হাওড়া, শিয়ালদহ এবং কলকাতা স্টেশন থেকে চলা শুরু করতে পারে। এই অবস্থায় ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব মনে করছেন, ভাড়ার বিষয়ে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না করলে পরিবহণ ক্ষেত্রে অস্থিরতা তৈরি হবে।
এআইটিইউসি অনুমোদিত সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে ট্যাক্সির ন্যূনতম ভাড়া ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা করার দাবি জানানো হয়েছে। এত দিন প্রথম দু’কিলোমিটারের জন্য ৩০ টাকা নেওয়া হত। তার পরে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ১৫ টাকার বদলে ২৫ টাকা করার দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের আরও দাবি, প্রতি ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড অপেক্ষার জন্য ওয়েটিং চার্জ ১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে আড়াই টাকা করা হোক। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘সামাজিক ক্ষেত্রে সরকার অনেক সহায়তা প্রকল্প চালু করলেও পরিবহণকর্মীরা অবহেলিত। গত এক বছরে তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি তলানিতে ঠেকেছে।’’
ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চালকদের আয় নেই। ক্যাব সংস্থাগুলি সরকারি নির্দেশিকা এড়িয়ে যাচ্ছে, নানা ছুতোয় টাকা কেটে নিচ্ছে। আমরা শীঘ্রই নতুন পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব।’’ প্রগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেন্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দে জানান, গত এক মাস যাত্রী না মেলায় প্রায় বন্ধ শিয়ালদহ, কলকাতা এবং হাওড়া স্টেশনের প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ। তিনি বলেন, ‘‘এখনই ভাড়া বাড়াতে বলছি না। তবে পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দেব।’’ সিটু পরিচালিত অ্যাপ-ক্যাব সংগঠনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এই হারে মূল্যবৃদ্ধি হলে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।’’