দুর্গাপুজোর আগে এলাকারই বেশ কিছু যুবকের সঙ্গে ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়েছিলেন দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার এক যুবক। ওই সংস্থার পক্ষ থেকে সম্প্রতি পরিবারকে জানানো হয়, অসুস্থ হয়ে পড়ায় এক জনের সঙ্গে ওই যুবককে ট্রেনে তুলে দিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তার পরে ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও খোঁজ নেই অনন বাসফোঁড় নামে ওই যুবকের।
এই অবস্থায় ছোট ছোট দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এক বার পুলিশ, এক বার বিভিন্ন স্টেশনে খোঁজ করে চলেছেন অননের স্ত্রী পম্পা। ৩০ ডিসেম্বর দেগঙ্গা থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগও করেন তিনি। পম্পার অভিযোগ, থানা থেকে রেল পুলিশের কাছে যেতে বলছে। যে যুবকের সঙ্গে অনন ফিরছিলেন, তিনি অন্য কামরায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন। তিনিও নাকি পরে আর অননের খোঁজ পাননি। আবার হাওড়া স্টেশনের রেল পুলিশের কাছে গেলে তারা বলছে, যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেই উত্তরপ্রদেশে গিয়ে অভিযোগ জানাতে। পম্পার কথায়, ‘‘এক দিকে সংসার চলছে না। তার পরে দু’টি বাচ্চা নিয়ে আমি কোথায়, কার কাছে যাব কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে দেগঙ্গার হরেকৃষ্ণ কোঙার কলোনির বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডলের সঙ্গে পরিচয় হয় অননের। প্রশান্তই তাঁকে ভিন্ রাজ্যে ঠিকাদার সংস্থায় শ্রমিকের কাজ জোগাড় করে দেন। প্রশান্তের মাধ্যমে বসিরহাটের একটি সংস্থার হয়ে তেলের খনি এলাকায় ডিনামাইট ফাটানোর কাজ করতে ৭২ জনের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে যান অনন।
অননের জামাইবাবু অরুণ মণ্ডল জানান, কাজ করতে গিয়ে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই যুবক। তখন গত ২৪ ডিসেম্বর পাপ্পু সর্দার নামে এক যুবকের সঙ্গে অননকে বাড়ি পাঠানো হয় বলে ওই সংস্থা তাঁদের জানায়। কিন্তু পাপ্পু দেগঙ্গার বাড়িতে ফিরলেও ফেরেননি অনন। অরুণ বলেন, ‘‘পাপ্পু জানিয়েছে, অননকে অন্য কামরায় তুলে দেওয়া হয়েছিল। হাওড়ায় নামার পরে তিনি অননের খোঁজ পাননি। সব কথা জানিয়ে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।’’
পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ছবি পাঠিয়ে অননের খোঁজ চলছে। অন্য দিকে পম্পার দাবি, ‘‘এত দিন হয়ে গেলেও স্বামীর খোঁজ মিলছে না। উত্তরপ্রদেশে যাওয়ার মতো পয়সাও আমাদের নেই।’’ উপায়হীন হয়েই বছর দশেকের মেয়ে ও সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে থানা, রেল পুলিশ আর হাওড়া স্টেশনে স্বামীর খোঁজ করে চলছেন বছর তিরিশের ওই বধূ।