প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাড়ির পথে দেবযানী মুখোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থ মা। রবিবার তাঁকে বাড়িতে দেখতে যাওয়ার জন্য প্যারোল পেলেন সারদাকাণ্ডে অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়। ১০ বছর দু’মাস জেলে থাকার পর আদালতের নির্দেশে ছ’ঘণ্টার ছুটি পেলেন তিনি। কড়া পুলিশি পাহারার মধ্যে রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ ঢাকুরিয়ার বাড়িতে গেলেন দেবযানী। মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ছ’ঘণ্টা পর আবার ফিরলেন দমদম জেলে।
২০১৩ সালে সারদা মামলায় সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গেই গ্রেফতার হন দেবযানী। জেলে দেবযানীর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন মা শর্বরী মুখোপাধ্যায়। গত কয়েক দিন ধরে অসুস্থ দেবযানীর মা। এর আগে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। এ বার অসুস্থ শর্বরীকে ঢাকুরিয়ার বাড়িতে দেখতে গেলেন দেবযানী। রবিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘অসুস্থ মাকে দেখতে যাচ্ছি। আমাকে কোনও প্রশ্ন করে বিব্রত করবেন না।’’
গত বছর সেপ্টেম্বরে দেবযানীর মা শর্বরী অভিযোগ করেছিলেন, সারদা-কাণ্ডে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর নাম জড়াতে তাঁর জেলবন্দি মেয়ের উপরে চাপ দিচ্ছে সিআইডি। সিবিআইকে চিঠিও দিয়েছিলেন তিনি। সেই চিঠির সত্যতা বিচার করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। শর্বরীর অভিযোগ ছিল, গত বছর ২৩ অগস্ট দমদম জেলে গিয়েছিলেন সিআইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ, সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা করে নিয়েছিলেন শুভেন্দু এবং সুজন, এমনটা বলতে দেবযানীকে চাপ দেন সিআইডি আধিকারিকেরা।
শর্বরীর আরও অভিযোগ ছিল, ওই দু’জনকে দেবযানীর সামনেই টাকা দেওয়া হয়েছে, তা বলার জন্যও চাপ দেওয়া হয়েছে তাঁর মেয়েকে। এ কথা না বললে দেবযানীকে আরও কিছু মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলেও শাসানো হচ্ছে। সিআইডির ভূমিকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে সিবিআইকে চিঠি দিয়েছিলেন শর্বরী। সিআইডির তরফে যদিও প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। সেই চিঠি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিল বিজেপি। মামলা করার অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মামলা বিচারাধীন। গত নভেম্বর রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডির বিরুদ্ধে এই ঘটনায় তদন্তের আবেদন জমা পড়ে কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাকারীর আর্জি, সিআইডির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক।