ক্রিস্টোফার র্যানডলফ অ্যালেন স্পেন্স।
বাড়ির মূল দরজা খোলা। ঘরের ভিতরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে এক ব্যক্তি। তাঁর হাতে ধরা মোবাইল ফোন।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার ইলিয়ট রোডের একটি বাড়ি থেকে এ ভাবেই উদ্ধার করা হয়েছে এক শিক্ষককে। পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম ক্রিস্টোফার র্যানডলফ অ্যালেন স্পেন্স (৫৪)। তিনি ওই বাড়িতে একাই ছিলেন। পুলিশ জানায়, ক্রিস্টোফার এক সময়ে একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। বর্তমানে তিনি গৃহশিক্ষকতা করতেন।
দেহের ময়না-তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘মাল্টিপল অর্গ্যান ফেলিয়োর’-এর কারণে মৃত্যু হয়েছে ক্রিস্টোফারের। পুলিশের দাবি, দু’টি পথকুকুরের দেখভাল করতেন তিনি। তাই তারা যাতে বাড়িতে অবাধে ঢুকে খাবার খেতে পারে, তার জন্য দরজা খোলা ছিল। ঘর থেকে কুকুরের জন্য রান্না করে রাখা খাবারও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই রাতে ওই দু’টি কুকুর দেহ উদ্ধারে বাধাও দিয়েছিল পুলিশকে। পরে অবশ্য তাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শহরের এক বিশিষ্ট অটোপ্সি শল্য চিকিৎসক বলেন, ‘‘কোনও মানুষের যে কোনও সময়ে মৃত্যু হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে, তা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার না করে বলা সম্ভব নয়। ময়না-তদন্তে সেই বিষয়গুলি দেখার পাশাপাশি ওই ব্যক্তির অন্য কোনও রোগ ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’’
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, ওই রাতে এক ছাত্র ক্রিস্টোফারকে ফোনে না পেয়ে বাড়িতে চলে আসেন। তখনই অচৈতন্য শিক্ষককে পড়ে থাকতে দেখে ১০০ নম্বরে ফোন করেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, ওই শিক্ষকের দেহে আঘাতের চিহ্ন নেই। রাতে ওই ছাত্রের সঙ্গে কথা বলে কোনও অসঙ্গতি মেলেনি বলে জানায় পুলিশ।
ওই তেতলা বাড়ির একতলায় ভাড়া থাকতেন ক্রিস্টোফার। তাঁর এক বোনও থাকতেন মাঝেমাঝে। ঘটনার দিন ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে ছিলেন ওই বোন। খবর পেয়ে শনিবার তিনি শহরে ফিরে অন্য পরিজনদের সঙ্গে ওই বাড়িতে যান। তবে সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। ক্রিস্টোফারের পোষা দু’টি কুকুর রয়েছে ঘরের বাইরে। প্রতিবেশীরা জানান, ওই রাতে পুলিশ এলে মৃত্যুর খবর জানাজানি হয়।