প্রতীকী ছবি।
বন্ধ থাকা বাড়ির সদর দরজার সামনে জমছিল খবরের কাগজ।
সে দিকে অবশ্য নজর পড়েনি কারও। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে হইচই শুরু হয় দমদম মল রোডে। পুলিশ এসে বাড়ির দরজা ভেঙে এক তরুণী ও তাঁর মায়ের দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, একটি ঘরের বিছানায় পড়ে ছিল মা অপর্ণা দাসের (৬০) পচাগলা দেহ। পাশের ঘরে মেলে মেয়ে বৈশাখী দাসের (২৫) ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ দেহ দু’টি ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। রিপোর্ট এলে জানা যাবে, কী ভাবে মৃত্যু হল মা-মেয়ের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে অপর্ণাদেবীর স্বামীর মৃত্যু হয়। তার পর থেকে মা-মেয়ে ওই বাড়িতে থাকতেন। পড়শিদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না তাঁদের। পাশের বাড়িতেই থাকেন বৈশাখীর কাকা নীলক দাস। তাঁদের সঙ্গেও বৈশাখীদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল না। বৈশাখীদের পরিজনেরা জানিয়েছেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে অবসাদে ভুগতে শুরু করেন অপর্ণা। সেই অবসাদের প্রভাব বৈশাখীর উপরেও পড়েছিল বলে তাঁদের ধারণা। নীলকবাবু জানান, মূলত বৈশাখীই ব্যাঙ্কের কাজ ও বাজারহাট করতেন। অপর্ণাদেবীর স্বামীর পেনশনের টাকাতেই তাঁদের সংসার চলত।
নীলকবাবু জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে মা-মেয়েকে বিশেষ দেখা যাচ্ছিল না। পাড়ার বাসিন্দারা জানান, দিন দুয়েক আগে বৈশাখীকে শেষ বার বাজারে দেখা গিয়েছিল। নীলকবাবু বলেন, “শুক্রবার সকাল থেকেই খুব দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। বিকেলের পর থেকে গন্ধের মাত্রা বেড়ে যায়।
তখন দেখি, ওদের বাড়ির সামনে দু’দিনের পুরনো খবরের কাগজ পড়ে রয়েছে। তখনই কেমন সন্দেহ হয়। জানলা ফাঁক করে দেখার চেষ্টা করি। বুঝতে পারি, ওই বাড়ি থেকেই গন্ধ আসছে। তখন পুলিশে খবর দিই।”
পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে একটি ঘরের বিছানার উপরে অপর্ণাদেবীর দেহ পড়ে থাকতে দেখে। বৈশাখীর খোঁজে পাশের ঘরে যেতেই পুলিশের নজরে পড়ে সিলিং থেকে ঝুলছে তাঁর দেহ। অপর্ণাদেবীর দেহ দেখে পুলিশের ধারণা, তিন-চার দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পড়শিদের দাবি ঠিক হলে মায়ের দেহ বাড়িতে রেখেই মেয়ে বৈশাখী বাজারে গিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মিললেই রহস্য কাটবে।