Daughter hi Mother

মায়ের মাথায় পর পর হাতুড়ির আঘাত অধ্যাপিকার, সল্টলেকে অভিজাত আবাসনে হুলস্থুল

মঙ্গলবার মা-মেয়ের বেঙ্গালুরু ফেরার কথা ছিল। ওই আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সকাল থেকেই মা-মেয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি, বচসার আওয়াজ পাচ্ছিলেন তাঁরা। এর খানিক পরেই হঠাৎ করে মায়ের আর্ত চিৎকার শোনেন নিরাপত্তা রক্ষীরা এবং প্রতিবেশীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:৪৩
Share:

সল্টলেকে দীপালি প্রতিহারের ফ্ল্যাট। এভাবেই গোটা ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। নিজস্ব চিত্র

মায়ের মাথায় উপুর্যপরি হাতুড়ির ঘা মেরে গুরুতর জখম করল মেয়ে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের অভিজাত জলবায়ু বিহার আবাসনে। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বছর ৬৭-র মা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বেলা ২টো নাগাদ বিধাননগর দক্ষিণ থানায় ফোন করে খবর দেন আবাসনের বাসিন্দারা। ওই আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটটি অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়র এস কে প্রতিহারের। তাঁর স্ত্রী দীপালি এবং মেয়ে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। সেখানে মেয়ে ঋতুপর্ণা একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপিকা।

মেয়ের কাছেই থাকতেন মা। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে মা-মেয়ে কলকাতায় আসেন এবং তার পরই কোনও পারিবারিক গণ্ডগোলের জেরে বাড়ি থেকে অন্যত্র কোথাও চলে যান এস কে প্রতিহার।

Advertisement

মঙ্গলবার মা-মেয়ের বেঙ্গালুরু ফেরার কথা ছিল। ওই আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সকাল থেকেই মা-মেয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি, বচসার আওয়াজ পাচ্ছিলেন তাঁরা। এর খানিক পরেই হঠাৎ করে মায়ের আর্ত চিৎকার শোনেন নিরাপত্তা রক্ষীরা এবং প্রতিবেশীরা। তারা ওই ফ্ল্যাটের দরজা ধাক্কা দেন। কিন্তু ভিতর থেকে তালা বন্ধ ছিল দরজা।

এর পরেই গ্রিলের দরজার ওপারে থাকা কাঠের দরজা ভেজানো থাকায় কোনও ভাবে খুলে যায়। সেই খোলা দরজা দিয়ে নিরাপত্তা রক্ষীরা এবং প্রতিবেশীরা দেখেন ঋতুপর্ণা হাতুড়ি দিয়ে পর পর আঘাত করছেন মা দীপালির মাথায়। গোটা ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তার মধ্যেই রক্তাক্ত মাকে টেনে পাশের ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন বছর ৩৮-এর ঋতুপর্ণা। ওই দৃশ্য দেখেই পুলিশে খবর দেন বাসিন্দারা। নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন প্রতিবেশীরা। ততক্ষণে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়।

প্রতিবেশীদের দাবি, শুধু মাকে আঘাত করাই নয়, ঋতুপর্ণা ঘরের মধ্যে কয়েকটি বাক্সে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সময় গ্যাসও খোলা ছিল। গোটা ফ্ল্যাটে আগুন ধরে যেতে পারতো প্রতিবেশীরা সময় মতো দরজা ভেঙে না ঢুকলে।

পুলিশ সূত্রে খবর, আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ওই মহিলা। হাসপাতালেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় ঋতুপর্ণাকে। কেন তিনি মা-কে প্রবল আক্রোশে মারছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। তাঁরা ঋতুপর্ণার ব্যবহারে অসঙ্গতি পায়। অভিযুক্ত মানসিক ভাবে কতটা সুস্থ তাও খতিয়ে দেখতে চিকিৎসকদের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবছিলেন তদন্তকারীরা। ঘটনার পিছনে সম্পত্তি নিয়ে কোনও পুরনো পারিবারিক অশান্তি আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, হাসাপাতালেই আটক করে রাখা হয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকেই পুলিশের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে যান ঋতুপর্ণা। ঋতুপর্ণার থোঁজ শুরু করেছে তদন্তকারী দলটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement