অনেকেরই আশা ছিল, মেট্রো পরিষেবা শুরু হলে অটোর উপদ্রব খানিক কমবে। কিন্তু, ঘণ্টায় একটি করে ট্রেন চলায় হতাশ অধিকাংশ যাত্রী। ফাইল ছবি।
ঢাকঢোল পিটিয়ে নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন থেকে বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হয়েছে জোকা-তারাতলা মেট্রোর। যাত্রীদের অনেকেই ভেবেছিলেন, এ বার বোধহয় ডায়মন্ড হারবার রোডে অটোর ‘যথেচ্ছাচার’ থেকে মুক্তি মিলবে। কিন্তু বাস্তবে ওই মেট্রোর পরিষেবার সময় যাত্রীদের সেই আশায় কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে। কারণ, একে তো পরিষেবা শুরু হচ্ছে সকাল ১০টায়। তার উপরে দুপুরের তিন ঘণ্টা, ১২টা থেকে ৩টে এই মেট্রোপথে ট্রেন চলবে না। অন্য দিকে, সাড়ে পাঁচটা বাজলেই দাঁড়ি পড়ে যাচ্ছে পরিষেবায়। ফলে সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়েই মেট্রো সফরের সুযোগ পাবেন না অফিসফেরত যাত্রীরা। তাঁদের আশঙ্কা, এরই সুযোগ নেবেন অটোচালকদের একটি বড় অংশ।
প্রসঙ্গত, ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে জোকা-তারাতলা রুটে দৈনিক প্রায় সাতশো অটো চলে। পুরো রুটের ভাড়া খাতায়কলমে ২০ টাকা। কিন্তু অভিযোগ, সারা দিনই অটোচালকদের একাংশ ইচ্ছে মতো কাটা রুটে গাড়ি চালান। সন্ধ্যায় সেই প্রবণতা আরও বাড়ে। একই পথ যেতে গিয়ে দু’-তিন বার অটো বদল করতে হয় বলে অহেতুক টাকা গচ্চা দিতে হয় যাত্রীদের। বেশির ভাগ অটোচালক প্রথমে তারাতলা থেকে শখেরবাজার এসে গাড়ি খালি করে ফেলেন। এর পরে কিছুটা এগিয়ে শখেরবাজার থেকেই ঠাকুরপুকুর যাওয়ার যাত্রী তোলেন তাঁরা। সেখান থেকে আবার নতুন যাত্রী নিয়ে জোকা পর্যন্ত যান। ফলে, একই পথ যেতে এক জন যাত্রীকে ২০ টাকার বদলে ৩০ তো বটেই, কখনও কখনও ৩৫ টাকাও গুনতে হয়। সময়ও লাগে বেশি। অনেকেরই আশা ছিল, মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ায় বোধহয় অটোর এই উপদ্রব কমবে। কিন্তু, ঘণ্টায় একটি করে ট্রেন চলায় সেই প্রয়োজন মিটবে না বলেই মনে করছেন অধিকাংশ যাত্রী।
যেমন, ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা সুকান্ত রায় আলিপুরে একটি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় কাজ করেন। সোমবার মেট্রোয় তারাতলা পর্যন্ত যাবেন বলে সকাল ৯টার মধ্যে স্টেশনে চলে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু বিকেলে অফিস থেকে ফেরার সময়ে মেট্রো মিলবে না শুনে স্পষ্টতই হতাশ সুকান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘এই মেট্রোর তারাতলা স্টেশনটি আসলে অজন্তা সিনেমার কাছে। ফলে সেখান থেকে আরও খানিকটা হাঁটতে হবে। তার উপরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার পরে মেট্রো চলবে না। তাই ইচ্ছে না থাকলেও সেই অটোতেই ফিরতে হবে।’’
অটোচালকেরা অবশ্য নতুন মেট্রো নিয়ে তেমন ভাবে ভাবিত নন। এক চালকের কথায়, ‘‘এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে মেট্রো ধরার মতো লোক হাতে গোনা। তাই আমাদের যাত্রী-সংখ্যায় এখনই কোনও প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।’’