—ফাইল চিত্র।
শহরের উপর দিয়ে যাওয়া ‘ইয়াস’-এর গতিবেগ নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও ভারী বৃষ্টি যে হবেই, সেটা প্রায় নিশ্চিত করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সে ক্ষেত্রে শহরের জমা জল সরানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুরসভার কাছে।
সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতেই সমস্ত বিভাগীয় আধিকারিকদের মঙ্গলবার থেকে দুর্যোগ কাটা পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার।
জমা জল সরাতে পুরসভা যাবতীয় প্রস্তুতির দাবি করলেও অভিজ্ঞতা বলছে, শহরের ভৌগোলিক কাঠামো এমনই যে নাগাড়ে তিরিশ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে জল জমবেই। ফলে উত্তরের আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, কলেজ স্ট্রিট, বিডন স্ট্রিট, সুকিয়া স্ট্রিট, এম জি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ছাড়াও দক্ষিণের জওহরলাল নেহরু রোড, এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বর, সাদার্ন অ্যাভিনিউ, এস পি মুখার্জি রোড, বেহালার বিস্তীর্ণ অংশে জমা জল নিয়ে চিন্তা থাকছেই।
সপ্তাহ কয়েক আগে বিকেলে এক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে শহরের বহু এলাকায় জল জমে যায়। রাজভবন চত্বরের জমা জলে পড়ে বাতিস্তম্ভে হাত লেগে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, তাই ১৬টি বরোয় থাকছে সিইএসসি-র দল। প্রতি বরোয় গাছ কাটার সরঞ্জাম, নিকাশি এবং বিপর্যয় মোকাবিলায় কর্মীদের মজুত রাখছে পুরসভা।
এ দিকে, জোয়ারের কারণে মঙ্গলবার দুপুরের পরে গঙ্গার জলস্তর ছিল ১৬.৭৫ ফুট। আজ, বুধবার জলস্তর ১৭.৭৫ ফুট হবে। ফলে এ দিনও শহরের সমস্ত লকগেট বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। ফলে ভারী বৃষ্টিতে শহরের নিচু এলাকায় জল জমার আশঙ্কা রয়েছে। মঙ্গলবার চেতলার বাড়ি থেকে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম পুর আধিকারিক এবং প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেন। জমা জল দ্রুত সরাতে নিচু এলাকায় পোর্টেবল পাম্প মজুত রাখতে বলেছেন তিনি।
কলকাতা পুরসভার ৭৪টি পাম্পিং স্টেশনে ৩৮৯টি পাম্প রয়েছে। অতিরিক্ত আরও ৩০টি পাম্প রয়েছে পুরসভার কাছে। পুরসভার নিকাশি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত, প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তারক সিংহ এ দিন বিভিন্ন পাম্পিং স্টেশন ঘুরে দেখেন। মোমিনপুর পাম্পিং স্টেশনে পাইপলাইন ভাঙা দেখে কর্তব্যরত ইঞ্জিনিয়ারকে শো-কজ় করা হবে বলে জানান তিনি।
কিন্তু জমা জল যে সব খাল দিয়ে বেরোবে, সেগুলি তো সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। তা হলে পাম্প চালিয়ে কি আদৌ লাভ হবে? এর যথাযথ উত্তর অবশ্য মেলেনি।