বিপজ্জনক: রাস্তার উপরে হেলে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। বৃহস্পতিবার, রাজডাঙায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
শহর জুড়ে উপড়ে গিয়েছে একের পর এক গাছ। তার জেরে কোথাও ভেঙেছে বিদ্যুতের খুঁটি, কোথাও আবার মাটির নীচ থেকে বিদ্যুতের কেব্লই উপড়ে বেরিয়ে এসেছে। যার জেরে শহরের একটি বড় এলাকা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ছিল বিদ্যুৎহীন। অভিযোগ, বুধবার রাত থেকেই সিইএসসি-র হেল্পলাইনে একাধিক বার ফোন করা হলেও কেউ ফোন তোলেননি। অসহায় শহরবাসী সমস্যার কথা জানাতে কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমে ফোন করেছেন। কিন্তু সেখানেও তাঁরা নির্ধারিত ভাবে কিছু জানতে পারেননি। কখন এই দুর্ভোগ কাটবে, তা নিয়ে অন্ধকারেই থাকতে হচ্ছে মানুষকে।
অতীতে এমন ভোগান্তির মুখে পড়েননি শহরবাসী। বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক জায়গাতেই বাড়ি কিংবা বহুতলে দিনভর পাম্প চালানো যায়নি। ফলে বৃহস্পতিবার সারাদিনই জলহীন অবস্থায় কেটেছে বহু পরিবারের। অন্য জায়গা থেকে জল টেনেছেন, নয়তো জল কিনেছেন তাঁরা। বিদ্যুতের অভাবে মোবাইল চার্জ দিতে না পেরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটছে লোকজনের। যাঁরা বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করছেন তাঁরাও সমস্যায় পড়েছেন।
রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এ দিন রাতেই কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। সব জায়গায় দ্রুত লাইন সারানোর কাজ চলছে। সিইএসসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিৎ ঘোষ জানান, ঝড় থামার পরে দ্রুত লাইন সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ ভাবে সকাল থেকে লাইন সারানোর কাজ চলছে। বহু জায়গায় লাইন থেকে গাছ সরিয়ে কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ দিন জানান, বহু বাড়ি থেকে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলে পুরসভার কন্ট্রোল রুমেও ফোন আসছে। বহু জায়গায় গাছের সঙ্গে বিদ্যুতের তার জুড়ে গিয়েছে। গাছ কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই সিইএসসি-র সঙ্গে পরিকল্পনা করে যৌথ ভাবে গাছ কাটার কাজ করতে হবে।
এ দিন রাত পর্যন্ত সিইএসসি-র অধীন আনন্দপুর, নিউ গড়িয়া, পঞ্চসায়র, মুকুন্দপুর, কসবা, দক্ষিণ সিঁথি-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা অন্ধকারে রয়েছেন। শিশু এবং অসুস্থ ও প্রবীণ মানুষেরাও চরম ভোগান্তির সম্মুখীন।
পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে দিন দশেক সময় লাগবে বলে ফিরহাদ হাকিম এ দিন জানান। পুর কর্তারা জানান, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় শহরের বিভিন্ন নিকাশি পাম্পিং স্টেশনও কাজ করছে না।