এত্তা জঞ্জাল: সভার তিন দিন পরে এখনও এমন অবস্থায় রয়েছে ব্রিগেড। মঙ্গলবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
ব্রিগেডে বামফ্রন্টের সমাবেশ ছিল গত রবিবার। তার তিন দিন পরেও পুরোপুরি সাফ হল না ওই মাঠ। মঙ্গলবার দিনভর সাফাইয়ের কাজ চলার পরেও দেখা গিয়েছে, ময়দানের কিছু অংশে জমে রয়েছে জঞ্জাল। যদিও বামফ্রন্টের নেতৃত্বের দাবি, আজ বুধবার দুপুরের মধ্যে পুরো পরিষ্কার হয়ে যাবে ব্রিগেড। বামফ্রন্ট নেতা রবীন দেবের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘কলকাতা পুরসভা কোনও রকম সাহায্য করেনি। জঞ্জাল নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি বা কম্প্যাক্টর পাওয়া যায়নি পুরসভার থেকে। আমাদের কর্মীরাই তিন দিন নিরলস পরিশ্রম করে ব্রিগেড সাফ করছেন।’’ যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কলকাতা পুর প্রশাসন।
মঙ্গলবার দুপুরে ব্রিগেডে গিয়ে দেখা গেল, প্রায় পুরো মাঠ জুড়েই ইতিউতি ছড়িয়ে জঞ্জাল। প্লাস্টিকের প্যাকেট হাওয়ায় উড়ছে। খাবারের সন্ধানে কুকুর আরও নোংরা করছে জায়গা। ছড়িয়ে থাকা জঞ্জালের এক পাশে কয়েক জন যুবক ক্রিকেট খেলছেন। তাঁদের এক জনের প্রশ্ন, ‘‘তিন দিন হল জনসভা হয়ে গিয়েছে। এত দিনেও পুরো সাফ হল না ব্রিগেড?’’
ব্রিগেডের সভার পরে কে সাফ করবে ময়দান, তা নিয়ে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ ও বামফ্রন্ট নেতৃত্বের মধ্যে চাপান-উতোর চলছে রবিবার থেকেই। তা মঙ্গলবারও পুরো মেটেনি। বামফ্রন্ট নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা পুরসভাকে বারবার অনুরোধ করার পরেও তাদের সাহায্য মেলেনি। অন্য দিকে কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাঠ সাফ করার জন্য তাদের সাহায্য চেয়ে বামফ্রন্ট আবেদনই জানায়নি। ফলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলে মাঠ পরিষ্কারের দায়িত্ব বামফ্রন্টেরই।
বামফ্রন্টের তরফে ব্রিগেড সাফ করার দায়িত্বে ছিলেন আব্দুল রউফ। এ দিন তিনি ব্রিগেডে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আমাদের মহিলা সংগঠন, বস্তি সংগঠন, যুব সংগঠন, ও ছাত্র সংগঠন থেকে ৪৭০ জন কর্মী-সমর্থক তিন দিন ধরে ব্রিগেড সাফ করছেন। আমরাই গাড়ি ভাড়া করে জঞ্জাল নিয়ে গিয়ে ভ্যাটে ফেলেছি। পুরসভা থেকে জঞ্জাল ফেলার কয়েকটি গাড়ি পেলেও অনেকটা সুবিধা হত।’’
যদিও পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘আমরা ওঁদের যথেষ্ট সাহায্য করেছি। ওঁরা তো জঞ্জাল নিয়ে ময়দানের পাশে ভ্যাটে ফেলে দায়িত্ব শেষ করেছেন। আমরাই তা গাড়ি করে নিয়ে গিয়েছি।’’ পুরসভার আধিকারিকেরা আরও দাবি করেছেন, ব্রিগেডের আশপাশের মাঠে বামফ্রন্ট কর্মী-সমর্থকদের খাওয়াদাওয়ার ফলে যে জঞ্জাল জমেছিল, তা পুরসভার তরফেই সাফ করা হয়েছে। এমনকি, মাঠের বিভিন্ন জায়গায় বাঁশ পোঁতার জন্য যে গর্ত করা হয়েছিল, সেই গর্তও তাঁরা বুজিয়েছেন। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘ব্রিগেডের মাঠটাই শুধু ওঁরা পরিষ্কার করছেন।’’