গণনা চলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
বছর তিনেক পরে ভোট হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে। ব্যালট বাক্স খুলতেই দেখা গেল বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে জোর ধাক্কার মুখে এসএফআই। আর প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। বেলা ১টার মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের গণনা। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গণনায় এগিয়ে রয়েছে ডিএসএফ। তবে কলা বিভাগের ফলাফল আসা এখনও বাকি। সেখানে এসএফআই-এর ফলাফল অপেক্ষাকৃত ভাল হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।
বিজ্ঞান বিভাগের ৩৯টি আসনের মধ্যে মাত্র ৮টিতে ভোট হয়েছিল। বাকিগুলিতে উই দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট (ডব্লুটিআই) প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন আগেই। যে ৮টিতে ভোট হয়েছিল, এ দিন গণনায় দেখা গিয়েছে, সেগুলিতেও দাপট বহাল রেখেছে ডব্লুটিআই। কোনও দলের সঙ্গে এই ছাত্র সংগঠন যুক্ত নয়।
কেন্দ্রীয় প্যানেলের জন্য যে ভোট দিয়েছেন বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়ারা, তাতেও ডব্লুটিআই-এর প্রতি বিপুল সমর্থন দেখা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় প্যানেলে ডব্লুটিআই পেয়েছে ১ হাজার ১৩টি ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তথা সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই পেয়েছে ২১৬। ব্যবধান বিপুল। তৃতীয় স্থানে এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও। তারা পেয়েছে ৩০টি ভোট। আর রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি পেয়েছে ৮টি ভোট।
আরও পড়ুন: উপহার থিয়েটার অগ্নিকাণ্ডে রায় সংশোধনের আর্জি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট
সাধারণ সম্পাদক পদের লড়াইয়ে ডব্লুটিআই পেয়েছে ১ হাজার ১টি ভোট। এসএফআই ২৩১, ডিএসও ৩০, টিএমসিপি ১০। সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে ডব্লুটিআই পেয়েছে ৯০৬টি ভোট। এসএফআই ২০৬। সান্ধ্য বিভাগের সহ সাধারণ সম্পাদক পদের লড়াইয়ে ডব্লুটিআই পেয়েছে ১১২টি ভোট। এসএফআই ৩৬।
আরও পড়ুন: চিকিৎসককে সপাটে চড়, প্রসূতি মৃত্যুতে উত্তেজনা একবালপুরের হাসপাতালে
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গণনা এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তবে সেখানে ডিএসএফ এগিয়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে নজর কেড়েছে এবিভিপি। এই প্রথম বার লড়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠনটি। জয়ের সম্ভাবনা এবিভিপি-র যে ছিল না, তা নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের সংশয় কমই ছিল। কিন্তু সঙ্ঘের ভাবধারাকে যাদবপুর ক্যাম্পাসে ঢুকতেই দেওয়া হবে না বলে একযোগে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিল বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বা বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কেও যাদবপুরে গিয়ে প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছিল। সিএএ-এনআরসি বিরোধিতার প্রতীক হিসেবেই বাবুল এবং ধনখড়কে আটকেছিল বামপন্থী সংগঠনগুলি। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি কতটা ভোট পেতে পারে, সে দিকে কিছুটা হলেও নজর ছিল রাজনৈতিক শিবিরের। বিজ্ঞান বিভাগে এবিভিপি কোনও প্রার্থী দেয়নি। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এবিভিপি-র ভোট প্রাপ্তি কিন্তু কিছুটা হলেও চমকে দেওয়ার মতো।
সব শেষে কলা বিভাগের গণনা শুরু হয়েছে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা গেলেও এসএফআই সেখানে এগিয়ে রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।