প্রতীকী ছবি।
সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে পারিবারিক অশান্তি চলছিল। যা মেটানোর নামে সালিশি সভা ডেকে ওই পরিবারের সদস্য এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল আগেই।
আবারও ওই যুবককে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার পুলিশের কাছে কামারহাটির এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই যুবক।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সালিশি সভায় মারধরের যে ছবি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল, তা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাসক দলের ওই কাউন্সিলর। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কামারহাটি পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের চিংড়ি তালাব এলাকার বাসিন্দা আক্রম আলিরা তিন ভাই। প্রত্যেকেই পরিবার নিয়ে ওই এলাকায় বসবাস করেন। প্রহৃত যুবক আক্রম জানাচ্ছেন, সম্প্রতি তাঁর এক ভাই মারা যান। এর পরেই জমি-বাড়ি ভাগাভাগি নিয়ে পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। ওই যুবক বলেন, ‘‘আচমকাই মৃত ভাইয়ের স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে পারিবারিক বিবাদে ঢুকে পড়েন পাশের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফসানা খাতুন। তিনি অশান্তির মীমাংসা করার জন্য সালিশি সভা ডাকেন।’’ আক্রম জানাচ্ছেন, এলাকারই একটি ক্লাবে সালিশি সভা চলার সময়ে ওই কাউন্সিলর আচমকাই তাঁকে চড় মারেন।
পেশায় গাড়িচালক আক্রমের দাবি, ভাইয়ের স্ত্রীর জমির দখল নিয়ে সেখানে প্রোমোটিংয়ের পরিকল্পনা করেছেন দু’নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর। তাঁর অভিযোগ, ‘‘চড় মারার পরেও কিছু বলিনি। আমার গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়েছে, তা-ও আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু সোমবার বিটি রোডের ধারের একটি বাড়িতে কাউন্সিলরের লোকজন আমাকে জোর করে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে।’’ এমনকি, বোমা-বন্দুক নিয়ে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের গুমটি দোকানটিও ভেঙে দেওয়া হয়। যে জমি নিয়ে বিবাদ চলছে, সেখানে পাঁচিল তুলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ আক্রমের। এর পরেই বুধবার অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আফসানা। তাঁর দাবি, ‘‘বোমা-বন্দুক নিয়ে কাউকে ভয় দেখানো হয়নি। ও সবে আমি থাকি না। ওঁদের সমস্যা মেটাতে প্রথম যে দিন আলোচনায় বসেছিলাম, তখন আক্রমই আমার উপরে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। নিজেকে বাঁচাতে ওঁকে চড় মেরেছিলাম।’’ আক্রম যে অঞ্চলের বাসিন্দা, তার পাশের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়ে আফসানা কেন পারিবারিক বিবাদ মেটাতে সালিশি সভা ডাকলেন?
আফসানার দাবি, ‘‘এক ভাই মারা যেতেই তাঁর স্ত্রীকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছেন আক্রম। সেটা ঠিক নয়, ওঁরা সকলেই আমার পরিচিত। তাই ওঁদের নিয়ে বসে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করেছিলাম। স্বামীহারা এক জন মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছি বলেই এই সব মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন আক্রম।’’
কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান, তৃণমূলের গোপাল সাহা বলেন, ‘‘দু’পক্ষের কেউই আমাকে নিজে থেকে বিষয়টি জানাননি। তবে শুনেছি পুলিশে অভিযোগ হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশ নিশ্চয়ই আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। কাউকে মারধর করাটা দল সমর্থন করে না।’’