লাগাতার প্রচার, এমনকি পুজোর উদ্বোধনে গিয়েও বারবার প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আবেদন করেছিলেন পুরকর্তারা। কিন্তু দেখা গেল, উৎসবের মরসুমে বহু জায়গাতেই প্লাস্টিকের পাত্র, গ্লাসের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়েছে। পুরসভার সচেতনতা প্রচারে যে কার্যত কোনও কাজই হয়নি, তা স্বীকার করছেন পুরকর্তৃপক্ষও। তবে প্লাস্টিক দূষণ রোধে লাগাতার সচেতনতার প্রচার চালানো হবে বলে জানাচ্ছে বিধাননগর পুরসভা। পাশাপাশি পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, আগামী বছর প্রয়োজনে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
বিধাননগর পুর এলাকায় দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, প্লাস্টিক-দূষণ রোধে পুরসভার সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি বাসিন্দারাও। কিন্তু প্লাস্টিক-থার্মোকলের পাত্রের বিকল্প হিসেবে শালপাতা, মাটির ভাঁড় ব্যবহার করতে গেলে ব্যয় অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। সেই কারণে ইচ্ছে থাকলেও থার্মোকল-প্লাস্টিক ব্যবহার করতে হচ্ছে। যেমন এফ ডি ব্লকের দুর্গাপুজোর কর্তা সৌমিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা যা রয়েছে, তা ব্যবহার করতে গেলে ব্যয় বেড়ে যায়। তবে আগামী বছর নিশ্চিত ভাবে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’ যদিও এ ই (পার্ট ওয়ান) ব্লকের পুজো উদ্যোক্তা সুপ্রিয় চক্রবর্তীর দাবি, পুজো মণ্ডপে গত কয়েক বছর ধরে প্লাস্টিক বর্জন করা হয়েছে। রীতিমতো লিফলেট দিয়ে বাসিন্দাদের কাছেও প্লাস্টিক বর্জনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তার সুফলও মিলেছে। এ কে ব্লকের পুজো উদ্যোক্তা প্রদীপ বণিক বলেন, ‘‘সবুজ রক্ষা এবং প্লাস্টিক-দূষণ রোধে আমরা সচেতনতার প্রচার চালিয়েছি। কোনও প্রকারের থার্মোকলের ব্যবহার করা হয়নি।’’ কিন্তু পুরকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, উৎসবের মরসুমে সল্টলেক থেকে শুরু করে বাগুইআটি, কেষ্টপুরের পুজো মণ্ডপগুলিতে বিপুল পরিমাণে থার্মোকলের পাত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। বারবার বলেও লাভ হয়নি। তবে তাঁদের দাবি, পুজোকর্তারা না শুনলেও কথা শুনেছেন বিধাননগরের বাজারগুলির বিক্রেতারা।
মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘লাগাতার প্রচারের পাশাপাশি পুজো কমিটিগুলির কাছে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত সাড়া মেলেনি। পুজোর সময়ে আবর্জনায় বিপুল পরিমাণে প্লাস্টিক আর থার্মোকল মিলেছে। সচেতনতার প্রচার চালিয়ে সমস্যার সমাধান করা হবে। তবে প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করার পরিকল্পনাও করা হতে পারে।’’