প্রতীকী ছবি।
লকডাউন-পর্বে জরুরি পরিষেবার অঙ্গ হিসেবে কলকাতার ছ’টি রুটে বিশেষ বাস পরিষেবা চালু রেখেছিল রাজ্য পরিবহণ নিগম। এ বার ওই পরিষেবা মিলবে ১৫টি রুটে। মঙ্গলবার থেকেই তা শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, জরুরি প্রয়োজনে যাঁদের রাস্তায় বেরোতেই হয়, তাঁদের কথা মাথায় রেখেই ওই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট রুটগুলিতে আপাতত আগের মতোই প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর বাস পাওয়া যাবে। পরিষেবা চালু থাকবে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।
বাসে যাত্রী তোলার ক্ষেত্রেও নিয়মের কড়াকড়ি থাকছে। যে সব রুটে বাস চালানো হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে হাওড়া থেকে কামালগাজি, নিউ টাউন, গড়িয়া, ঠাকুরপুকুর এবং বারুইপুরগামী বাস। এ ছাড়াও এসপ্লানেড-আমতা, ডানলপ-বালিগঞ্জ, যাদবপুর-করুণাময়ী, জোকা-বারাসত, উল্টোডাঙা-সল্টলেক, গড়িয়া-বারাসত এবং টালিগঞ্জ-নিউ টাউন রুটে বাস চলবে। প্রতিটি বাসে সর্বোচ্চ ২৫ জন করে যাত্রী তোলা যাবে বলে খবর। যাত্রীদের অবশ্যই মাস্ক পরে বাসে উঠতে হবে। বাসে যাত্রী-সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। বাস রুটে থাকা বিভিন্ন থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে ওই বাস পরিষেবার বিষয়ে অবহিত করা হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রুখতে বাসের চালক এবং কন্ডাক্টরদের মাস্ক ছাড়াও ফেস কভার এবং পিপিই দেওয়া হয়েছে। থাকছে স্যানিটাইজ়ারও। নবান্ন সূত্রের খবর, লকডাউন চললেও ধাপে ধাপে অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু হওয়ায় একাধিক জরুরি প্রয়োজনে মানুষকে বেরোতে হচ্ছে। সে কথা মাথায় রেখেই বাসের সংখ্যা বাড়ানো হল।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে আরও দুই সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ
তবে তৃতীয় দফার লকডাউন-পর্বের শেষের দিকে বাসে যাত্রী-সংখ্যা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে গিয়ে পরিবহণকর্মীদের যথেষ্ট প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে খবর। সম্প্রতি পাটুলির কাছে এস-২৪ রুটের একটি বাসে কয়েক জন জোর করে ওঠার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। দূরত্ব-বিধি মেনে চলার স্বার্থে কন্ডাক্টর যাত্রী তুলতে আপত্তি করলেও তাঁদের একাংশ কন্ডাক্টরকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। তখন বাধ্য হয়েই পুলিশের দ্বারস্থ হন চালক। পাটুলি থানার পুলিশ এসে পরে কন্ডাক্টরকে উদ্ধার করে বাস ছাড়ার ব্যবস্থা করে।
আরও পড়ুন: মেছুয়া থেকে সরছে না ফলবাজার
একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ডানলপ-বালিগঞ্জ রুটের একটি বাসে। চিড়িয়ামোড়ের কাছে দিন কয়েক আগে ওই বাসে উঠতে না পেরে যাত্রীদের একাংশ সেটি আটকে দেন বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দিয়েও এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সামনে পড়তে হওয়ায় পরিবহণকর্মীদের উদ্বেগ বাড়ছে। তাই পরিষেবা সুষ্ঠু ভাবে সচল রাখতে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলছে পরিবহণ দফতর। বাসে যাত্রীরা ভিড় করে ওঠার চেষ্টা করছেন দেখলেই ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। করোনা পরিস্থিতিতে গণ পরিবহণ স্বাভাবিক রাখতে যাত্রীদেরও স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে সজাগ থাকা উচিত বলে মনে করেন পরিবহণকর্তারা।