ছবি সংগৃহীত
লকডাউনের রাস্তায় গাড়ি বার করতে এ বার আর থানা নয়, কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের ডিসি-র থেকে ই-পাস বা অনুমতিপত্র নিতে হবে গাড়িচালকদের। সে জন্য কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। রাস্তায় নামার কারণ এবং প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে পারলে তবেই ওই অনুমতি মিলবে। তবে যাঁর নামে ওই ই-পাস দেওয়া হবে, তাঁকে অবশ্যই গাড়িতে থাকতে হবে। তৃতীয় দফার লকডাউনে রাস্তায় অকারণে গাড়ি বেরোনো রুখতে এ বার নতুন এই নিয়মই চালু করতে চলেছে লালবাজার।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে,সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের জন্য ওই ই-পাস দেওয়া হবে এবং তা শুধু কলকাতা পুলিশের আওতাভুক্ত এলাকাতেই কার্যকর হবে। কলকাতা পুলিশের এলাকার বাইরে ওই ই-পাসের বৈধতা থাকবে না।
দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পরে প্রথমে রাস্তায় গাড়ি বেরোনোর জন্য থানা থেকে ই-পাস বা প্রয়োজনীয় অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তা নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ লালবাজারের কাছে জমা পড়ে। এর পরেই সেই নিয়মে কিছু বদল আনা হয়েছে। আগে বলা হয়েছিল যে, থানার ওসি অনুমতি দিলেও তাতে সেই ডিভিশনের ডিসি-র স্বাক্ষর থাকতে হবে। কিন্তু তা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এ বারের নিয়মে তার বদল ঘটেছে। এখন থেকে শুধুই ডিসি ট্র্যাফিক ওই ই-পাস দেবেন। তবে আপৎকালীন কাজে হঠাৎ গাড়ি বার করতে হলে সে ক্ষেত্রে নাগরিকদের প্রয়োজনীয় নথি সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের ডিসি রূপেশ কুমার এবং যুগ্ম কমিশনার সন্তোষ পাণ্ডে ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে শহরের পথে নাকা তল্লাশি আরও কঠোর করা এবং শুধুমাত্র বৈধ ই-পাস থাকলে তবেই গাড়িকে ছাড় দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শহরের কয়েকটি জায়গাকে চিহ্নিত করে, সেখানকার রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে নাকা তল্লাশি করার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শহরের ঢোকা-বেরনোর পথে উচ্চপদস্থ অফিসারদের থাকতে বলা হয়েছে।
ই-পাসের জন্য এত কড়াকড়ি করা হল কেন? পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, তৃতীয় দফা লকডাউনে বেশ কিছু অফিস খুলেছে। ৪৭ রকমের দোকানও খোলার অনুমতি পেয়েছে। এর ফলে মঙ্গলবার থেকে রাস্তায় গাড়ির পরিমাণ এক ধাক্কায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। সেই সুযোগ নিয়ে বিনা কারণে কেউ যাতে রাস্তায় গাড়ি বার না করেন, তা নিশ্চিত করতেই ওই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে গার্ডের আধিকারিকদের।
একই সঙ্গে সূত্রের দাবি, গাড়ির বিরুদ্ধে তল্লাশি চালানো ছাড়াও কোনও এলাকায় দোকান খোলা থাকলে তা স্থানীয় থানাকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট নথি এবং কারণ দেখাতে পারলে খুব দ্রুত ই-পাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে কাউকে রাস্তায় বার হতে হলে হাসপাতালের নথি বা যে কারণে বেরিয়েছেন সে সংক্রান্ত নথি সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে।