Coronavirus

করোনায় মৃত্যু সন্দেহে বৃদ্ধার বাড়িতে তালা প্রতিবেশীদের

গত ৩০ এপ্রিল টালায় এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত তরুণীর মৃত্যু হয়। তরুণীর প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয় তিনি করোনায় মারা গিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৩:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি

টালার পরে এ বার পর্ণশ্রী। প্রতিবেশীর স্বাভাবিক মৃত্যুতেও করোনার সন্দেহ। যার জেরে বুধবার সকালে এক বৃদ্ধার দেহ সৎকারের আগে তাঁর পরিবারের লোকজনকে চরম হেনস্থার সামনে পড়তে হল। অভিযোগের তির ওই বৃদ্ধার প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বৃদ্ধা করোনায় মারা গিয়েছেন দাবি করে ওই প্রতিবেশীরা দীর্ঘক্ষণ তাঁর দেহ বাড়ির বাইরে বার করতে দেননি। বৃদ্ধার বাড়ির মূল দরজায় তাঁরা তালা দিয়ে দেন বলেও অভিযোগ। এমনকি বৃদ্ধার মৃত্যুর পরে তাঁর ডেথ সার্টিফিকেট লিখতে আসা চিকিৎসককেও ওই প্রতিবেশীরা তাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ তাঁর নাতনির।

Advertisement

গত ৩০ এপ্রিল টালায় এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত তরুণীর মৃত্যু হয়। তরুণীর প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয় তিনি করোনায় মারা গিয়েছেন। এর পরে তাঁরা ভয়ে বাড়িতে ঢুকে দরজা, জানলা বন্ধ করে দেন। তাঁর অন্ত্যেষ্টির ব্যবস্থা করতে কেউ এগিয়ে আসেননি। শেষে পুরসভা ওই কাজে উদ্যোগী হয়।

বৃদ্ধার নাতনি জানান, পর্ণশ্রী থানার পুলিশ খবর পেয়ে এ দিন তাঁদের বাড়িতে এসে তাঁর দিদিমার দেহ অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

Advertisement

কী হয়েছিল? ওই তরুণী জানান, বুধবার ভোরে ঘুমের মধ্যেই মারা যান তাঁর ৮০ বছরের দিদিমা। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। লকডাউন চলায় পারিবারিক চিকিৎসক ফোনেই দিদিমার ওষুধ বলে দিচ্ছিলন।

আরও পড়ুন: বডিগার্ড লাইন্সে পচাগলা দেহ, রহস্য

তরুণীর অভিযোগ, ‘‘দিদিমা মারা যাওয়ার খবর পেতেই হঠাৎ করে প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে যান। তাঁরা দিদিমার মৃত্যু স্বাভাবিক কারণে হয়নি বলে দাবি করতে থাকেন। দিদিমা করোনায় মারা গিয়েছেন বলেও ওঁরা চেঁচামেচি শুরু করে দেন।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, সকাল থেকে এ ভাবে দীর্ঘক্ষণ তরুণীদের বাড়ির সামনে স্থানীয়েরা ভিড় করে থাকেন। ওই তরুণীদের বেরোতে দেওয়া হয়নি। তরুণীর অভিযোগ, তাঁদের বাড়ির মূল গেটে বাইরে থেকে তালাও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি বৃদ্ধার গত কয়েক দিন ধরে চলা চিকিৎসার প্রেসক্রিপশন দেখালেও পড়শিরা মানেনি।

ওই তরুণী আরও জানিয়েছেন, তাঁর দিদিমার মৃত্যুর পরে পারিবারিক চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট দিতে এলে তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। চিকিৎসককে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

এর পরেই ওই বাড়ি থেকে পর্ণশ্রী থানায় ফোন করে সাহায্য চাওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জমায়েতকারী প্রতিবেশীদের সরিয়ে দেয়। তার পরে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে বৃদ্ধার দেহ বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্র দু’জনেই জানিয়েছেন, বৃদ্ধার স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে।

বুধবারের ঘটনায় আতঙ্কিত বৃদ্ধার নাতনি বলেন, “আমার চারপাশের লোকজন যে এ রকম করবেন, তা ভাবতেও পারিনি। করোনায় মৃত্যু হলে আমরা নিজেরা কি ভয় পাব না! এ সব রোগ কি কেউ ফেলে রাখে? তা বলে কোনও কথা না শুনে পাড়ার ৩০-৪০ জন মিলে যদি কারও বাড়িতে তালা দিয়ে দেন, তা হলে কী বলব!”

আরও পড়ুন: অবশেষে খুলল হাওড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement