প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণের আবহে জেলের ভিড় পরিবেশ থেকে বেরোতে চাইছেন বন্দিরা। আবার বিচারাধীন বন্দিদের পরিজনেরা ভিড় জমাচ্ছেন জেলের ফটকে। এই দু’টি বিষয় চিন্তা বাড়াচ্ছে বিভিন্ন জেলের কর্তৃপক্ষের।
রাজ্যের অনেক জেলেই বন্দির সংখ্যা ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি। জেলে বন্দিদের সংখ্যা কমাতে দণ্ডিতদের প্যারোলে এবং বিচারাধীন বন্দিদের তিন মাসের অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে রাজ্যে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান হচ্ছে না। কারণ, জেলে থাকা বন্দির সংখ্যার তুলনায় মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা অনেকটাই কম বলে মত অনেক জেলকর্তার।
ইতিমধ্যে দু’হাজারের বেশি বন্দি রাজ্যের বিভিন্ন জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে কারা দফতর সূত্রে খবর। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা বাড়বে।
আরও পড়ুন: ‘জ়ুম’ নিয়ে সাবধান হতে বলছে স্কুল
এই পরিস্থিতিতে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়া আরও বেশি করে চালানো গেলে সুবিধা হত বলে মনে করছেন বহু বন্দির পরিজনেরা। তাঁদের মতে, এমন অনেক বন্দি রয়েছেন, যাঁদের আদালতে তোলা হলে দ্রুত জামিন মিলবে। কিন্তু এখন সেই সুযোগ নেই। তাই দীর্ঘ সময় জেলে থাকতে থাকতে ধৈর্য হারাচ্ছেন তাঁদের কেউ কেউ। সেই ধৈর্যচ্যুতিতেই সমস্যা বাড়ছে জেলে। গত শনিবার জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলের বিক্ষোভের মূলেও ছিল বন্দি মুক্তির সমস্যা। যদিও প্রশাসনের একাংশের মতে, ভিডিয়ো কনফারেন্সে বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। সর্বত্র দ্রুত ভিডিয়ো কনফারেন্সের ব্যবস্থা করতে সময় লাগছে। জলপাইগুড়ির মতো রাজ্যের অন্য জেলেও বিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন কারাকর্তাদের অনেকে। সেই কারণে বন্দিদের অনুযোগ-অভিযোগগুলি বেশি করে সমাধান করার চেষ্টা করছেন বিভিন্ন জেল কর্তৃপক্ষ। এক কর্তার কথায়, ‘‘বন্দিদের ভাল রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু সবটা আমাদের হাতে নেই।’’
লকডাউনের মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলের ফটকে ভিড় জমছে। কারণ বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন তাঁদের পরিজনেরা। এ ক্ষেত্রে বিচারাধীন বন্দিদের পরিজনেদের ভিড় বেশি হচ্ছে বলে বিভিন্ন জেল সূত্রের খবর। অনেক সময়েই বন্দিদের জন্য শুকনো খাবার নিয়ে আসেন পরিজনেরা। সেই খাবার এবং দেখা করার সময়ের ভিড়ই চিন্তা বাড়াচ্ছে জেলের কর্তাদের। শুকনো খাবার সব সময়ে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন জেলকর্তাদের অনেকে। পাশাপাশি, বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হলেও পরিজনেরা সব সময়ে তা মানছেন না। এমনকি, ভিড়ে ধাক্কাধাক্কিও হচ্ছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘শুকনো খাবার সবটা জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে যে ভাবে ভিড় বাড়ছে, তাতে সমস্যা না হলেই ভাল।’’
আরও পড়ুন: শুরুতেই বেলগাছিয়া বস্তি, আজ র্যাপিড টেস্ট শুরু হল রাজ্যে