বন্ধ: সুনসান হাওড়ার কালীবাবুর বাজার। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
হাওড়ায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া চারটি থানা এলাকায় আজ, সোমবার সকাল থেকে সম্পূর্ণ লকডাউন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন কোভিড জিরো’। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার থেকে এই চারটি থানা এলাকায় কেউ বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না। বাজার, মুদিখানা এমনকি ওষুধও বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। যে চারটি থানা এলাকায় ওই অপারেশন কোভিড জিরো চালু হচ্ছে সেগুলি হল মালিপাঁচঘরা, গোলাবাড়ি, হাওড়া ও শিবপুর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো হাওড়াকে ১৪ দিনের মধ্যে রেড থেকে গ্রিন জ়োনে আনার জন্য হাওড়া পুরসভা এলাকার সব বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয় রবিবার থেকে। আরও বেশি করে পরীক্ষার জন্য সোমবার থেকে আটটি সংক্রমিত ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াও হাওড়া পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সন্দেহভাজন কোভিড রোগীর লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর কাজ শুরু হবে।
এ দিন হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘এই কর্মসূচিতে শামিল হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষ ফিল্ড মনিটরিং দলও। ছ’জন সদস্যের এই দলও বাড়ি বাড়ি যাবে এবং পুরো প্রক্রিয়ায় সাহায্য করবে।’’
আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিল পুলিশ
এ দিন দাশনগর থানা থেকে শুরু করে মালিপাঁচঘরা থানা পর্যন্ত সমস্ত এলাকায় যেমন বাজার বসেনি, তেমনই কোনও দোকানপাটও খুলতে দেওয়া হয়নি। ট্রলি করে বাজার পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করা হয়েছে। তবে এ থেকে আর এক ধাপ এগিয়ে হাওড়া জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও পুরসভা যৌথ ভাবে চারটি থানা এলাকায় সামগ্রিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। রবিবার হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) প্রিয়ব্রত রায় জানান, সিদ্ধান্ত হয়েছে সোমবার থেকে মালিপাঁচঘরা, গোলাবাড়ি, হাওড়া ও শিবপুর থানা এলাকায় ১০০ শতাংশ লকডাউন কার্যকর করা হবে। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে বাজার, মুদিখানার জিনিসপত্র ও ওষুধ।
ডিসি (সদর) বলেন, ‘‘এই চারটি থানা এলাকায় কোথাও কিছু খোলা থাকবে না। আমাদের ফেসবুক পেজ ও ওয়েব পোর্টালে চারটি থানা এলাকার দোকান, বাজার, ওষুধের দোকানের নম্বর দেওয়া থাকবে। সেখানে ফোন করলে সব বাড়িতে পৌঁছে যাবে। এ জন্য কিছু ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও অনলাইন হোম ডেলিভারি সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে।’’
এ দিকে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ সোমবার থেকেই হাওড়া জেলা হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিক চালু করা হচ্ছে। ধাপে ধাপে খোলা হবে হাসপাতালের বাকি বিভাগগুলি। হাওড়া হাসপাতালের সুপার-সহ একাধিক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী করোনা সংক্রমিত হওয়ার পরে প্রায় দেড় সপ্তাহ ওই হাসপাতাল পুরো বন্ধ রাখা হয়। এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালের সব ক’টি বিভাগ-সহ পুরো এলাকা জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়া চলে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, পরিস্থিতি আর একটু ভাল হলে এবং নতুন করে কোনও সমস্যা না হলে চলতি সপ্তাহে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ নবজাতক এবং শিশু বিভাগ চালু করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘অক্ষত থাকুক করোনার বিরুদ্ধে লড়াই’, কাটল অক্ষয় তৃতীয়া
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)