প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণের জন্য চলছে সামগ্রিক লকডাউন। তার মধ্যেই এলাকায় আসছে না পুরসভার জলের গাড়ি। জল আনতে পাশের পাড়ায় গেলে আবার লকডাউন ভাঙার জন্য লাঠি উঁচিয়ে পুলিশ তাড়া করছে বলে অভিযোগ। এই ত্রিফলা সমস্যায় জেরবার হাওড়ার দাশনগরের নবজীবন সমিতি এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, সমস্যার কথা পুরসভায় বারবার জানিয়েও ফল হয়নি। পুরসভার বক্তব্য, চালকেরা আসছেন না, তাই জলের গাড়ি পাঠানো যাচ্ছে না। যদিও পুরর্কতাদের দাবি, চালকদের ছুটি দেওয়া হয়নি। তাঁরা কেন আসছেন না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
হাওড়ার দাশনগর থানার ঠিক পিছনেই নবজীবন সমিতি এলাকা। হাওড়া পুরসভার ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই অংশে প্রায় ৩৫০০ মানুষের বাস। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাওড়া পুরসভার সংযুক্ত এলাকা হওয়ায় ওই ওয়ার্ডের উন্নয়ন ঠিক ভাবে হয়নি। কয়েক বছর আগে রাস্তা, নিকাশির সংস্কার হলেও পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত হয়নি। ওয়ার্ডের কিছু অংশে পুরনো পাইপলাইনে যে ঘোলাটে হলুদ জল আসে তা পান করার উপযুক্ত নয়। নতুন পাইপলাইন পাতা হলেও পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের পানীয় জল পৌঁছয়নি এলাকায়। পুরসভার পাঠানো জলের গাড়িই ভরসা বাসিন্দাদের।
এলাকার এক বাসিন্দা নারায়ণ মণ্ডল বলেন, ‘‘পাইপলাইনের পরিস্রুত পানীয় জল এখনও এলাকায় পৌঁছয়নি। এই লকডাউনের মধ্যে পুরসভার জলের গাড়ি আসাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, আগে রোজ দু’টি করে জলের গাড়ি পাঠাত পুরসভা। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে গাড়ি আসছে না। তীব্র জলসঙ্কটে পড়েছেন বাসিন্দারা। কয়েক দিন আগে থানার সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন তাঁরা। জল না-পাওয়ার কথা জানিয়ে রাস্তার ধারে পোস্টারও লাগিয়েছেন এলাকাবাসীরা। আর এক বাসিন্দা তনিমা পাল বলেন, ‘‘দিনের পর দিন পানীয় জল পাচ্ছি না। একটু দূরে সানপুর মোড়ে জল আনতে গেলেও লকডাউন ভাঙার জন্য জুটছে পুলিশের লাঠি। তা হলে আমরা জল পাব কী করে?’’ আপাতত সমস্যার সমাধান করতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নিয়মিত সানপুর থেকে জল এনে বাসিন্দাদের দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা।
হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘পানীয় জলের গাড়ি তো নিয়মিত যাওয়া উচিত। জলের গাড়ির চালকদের ডিউটি রয়েছে। তাঁরা কেন ওই এলাকায় যাননি, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের দাবির কথা পুরসভাকে জানানো হয়েছে। পুলিশকর্মীদের বলা হয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা সানপুর মোড়ে জল আনতে গেলে তাঁদের যেন বাধা দেওয়া না-হয়।’’
আরও পড়ুন: পুলিশ কড়া হতেই রাস্তা ফাঁকা, অন্যত্র উল্টো ছবি
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)