Coronavirus

দোকান-ছাপাখানা বন্ধ, ঘরে পৌঁছল না বাংলা ক্যালেন্ডার

শিয়ালদহ অঞ্চলের এক ছাপাখানার মালিক বরুণ দত্ত বলেন, ‘‘আমি ক্যালেন্ডার ছাপি। প্রতি বছরই চৈত্র মাসের মাঝামাঝি দোকানিরা ক্যালেন্ডারের বরাত দিতেন। এ বার লকডাউনের জন্য বরাত এল না।’’

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি

বিভিন্ন দোকান থেকে ক্যালেন্ডার আর মিষ্টির প্যাকেট হাতে হাসিমুখে বেরিয়ে আসছেন ক্রেতারা। বাংলা নববর্ষের দিনে বিভিন্ন দোকানের এটাই চেনা ছবি। এই বছর করোনা-আতঙ্কে তাল কেটে গিয়েছিল সেই ছন্দের। বছরের অন্য সময়ে শহরবাসী ইংরেজি ক্যালেন্ডারে অভ্যস্ত হলেও বাংলা মাসের তারিখ, বার, পুজো-পার্বণে প্রয়োজন বাংলা ক্যালেন্ডারের। পঞ্জিকা দেখার অভ্যাস অনেকেরই নেই। চটজলদি কিছু দেখতে ভরসা বাংলা ক্যালেন্ডারই।

Advertisement

শিয়ালদহ অঞ্চলের এক ছাপাখানার মালিক বরুণ দত্ত বলেন, ‘‘আমি ক্যালেন্ডার ছাপি। প্রতি বছরই চৈত্র মাসের মাঝামাঝি দোকানিরা ক্যালেন্ডারের বরাত দিতেন। এ বার লকডাউনের জন্য বরাত এল না।’’ শুধু শিয়ালদহ অঞ্চলেই নয়, কলকাতার আশপাশ ও অন্য জেলাতেও একই কারণে ক্যালেন্ডার ছাপায় বাধা পড়েছে। আড়িয়াদহের এক ব্যবসায়ী ঝন্টু পাল বলেন, ‘‘নববর্ষে তো বটেই, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেও দোকানিরা ক্রেতাদের হাতে ক্যালেন্ডার তুলে দেন। প্রতি বছরই ক্যালেন্ডার তৈরির বাঁধাধরা অর্ডার থাকত। এই প্রথম অর্ডার আসেনি। ’’

ইতিহাসবিদ গৌতম ভদ্র বলেন, ‘‘নববর্ষে দোকানিরা ক্রেতাদের বাংলা বছরের যে ক্যালেন্ডার বিতরণ করেন, তার ইতিহাস বেশি দিনের নয়। স্বাধীনতার আগে বিশের দশক থেকে এই প্রথা বাংলায় চালু হয়। বাংলাদেশে ঘটা করে নববর্ষ পালন এবং ক্যালেন্ডার দেওয়ার প্রথা রয়েছে। পরবর্তী কালে সেখান থেকে এই বাংলার ব্যবসায়ীরা ক্যালেন্ডার তৈরি এবং তা ক্রেতাদের মধ্যে বিতরণ করার সেই প্রথা গ্রহণ করেন।’’ তাঁর মতে, ক্যালেন্ডার বিতরণের মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক তৈরি হয়।

Advertisement

শহরের বহু দোকান মালিক জানালেন, এ বার নববর্ষ লকডাউনের মধ্যে পড়ায় দোকান খোলা সম্ভব হয়নি। যে সব প্রেসে ক্যালেন্ডার ছাপা হয়, সেগুলিও বন্ধ। সব ব্যবসায় আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে। ফলে, শহর ও শহরতলির কোনও দোকানের মালিকই এই বছর ক্যালেন্ডার তৈরি করাতে পারেননি।

বৌবাজার এলাকার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী দেবাশিস দে বলেন, ‘‘আমার দোকানে পঞ্চাশ বছর ধরে নববর্ষের দিন ক্যালেন্ডার বিতরণ করার রেওয়াজ চলে আসছে। এই বছর প্রথম তা হল না।’’ গড়িয়াহাটের এক বস্ত্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘লকডাউনে ব্যবসা করাই দায়। ক্যালেন্ডারের কথা এ বার ভাবিইনি!’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement